ফ্রয়েডের মতে, কীভাবে ব্যক্তিত্বের গতিশীলতা তৈরি হয়

ফ্রয়েডের মতে, ব্যক্তিত্বকে গতিশীল করে তুলেছে একপ্রকার মানসিক শক্তি। মানসিক শক্তি খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত হয় এবং পেশি সঞ্চালন, শ্বাসপ্রশ্বাস প্রত্যক্ষণের মাধ্যমে ব্যয় হয়। সহজাত প্রবৃত্তির মাধ্যমে মানসিক শক্তির প্রকাশ ঘটে থাকে। সহজাত প্রবৃত্তি হল অভ্যন্তরীণ শারীরিক উত্তেজনার মানসিক রূপ। মানসিক রূপকে বলা হয় ইচ্ছা এবং যে শারীরিক উত্তেজনার মাধ্যমে এর সৃষ্টি হয়, তাকে চাহিদা বা অভাব বলে। মানুষ ক্ষুধার্ত হলে খাদ্যের অন্বেষণে বার হয়। এখানে ক্ষুধা হল সহজাত প্রবৃত্তি। প্রবৃত্তির 4টি বৈশিষ্ট্য আছে, যথা- উৎস, লক্ষ্য, উদ্দেশ্যবস্তু, অনুপ্রেরণা ইত্যাদি। শারীরিক চাহিদা হল প্রবৃত্তির উৎস। শারীরিক চাহিদা দূরীকরণ হল প্রবৃত্তির লক্ষ্য। এইরূপ চাহিদা বা প্রয়োজন মিটবার পর যেসব কাজ একজনকে করতে হয়, তার সমষ্টি হল উদ্দেশ্যবস্তু এবং অনুপ্রেরণা হল প্রবৃত্তির শক্তি।

ফ্রয়েড সহজাত প্রবৃত্তিগুলোকে দুইভাগে ভাগ করেন, যথা- জীবন প্রবৃত্তি (Eros or life instinct) এবং মরণ প্রবৃত্তি (Thanatos or death instinct)। জীবন প্রবৃত্তির সাহায্যে ব্যক্তি আত্মরক্ষা ও বংশবৃদ্ধির কাজে যুক্ত থাকে। ক্ষুধা, তৃয়া, কাম ইত্যাদি জীবন প্রবৃত্তির অন্তর্ভুক্ত। যে শক্তির মাধ্যমে প্রবৃত্তি কাজ করে, তাকে ফ্রয়েড লিবিডো নামে আখ্যায়িত করেন। যুদ্ধ করার এবং হত্যা করার প্রবৃত্তিকে মরণ প্রবৃত্তি বলা হয়। মানুষ মাত্রই মরণশীল তাই জীবনের শেষ উদ্দেশ্য হল মৃত্যু।

পাশাপাশি ফ্রয়েড বলেছেন, একাত্মীভবন ও মূলভিত্তিকরণ পদ্ধতির সাহায্যে ব্যক্তিত্বের গতিশীলতার বিকাশ ঘটে। দৈহিক বৃদ্ধি, হতাশা, দ্বন্দ্ব এবং ভীতি এই চারটি অবস্থা ব্যক্তির মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং উত্তেজনা হ্রাস করার জন্য ব্যক্তিকে নতুন পদ্ধতি শিখতে হয়।

ফ্রয়েডের মতে, কীভাবে ব্যক্তিত্বের গতিশীলতা তৈরি হয়

Leave a Comment Cancel reply