পরীক্ষামূলক পদ্ধতি কাকে বলে? এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য লেখো

পরীক্ষামূলক পদ্ধতি কাকে বলে? এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য লেখো

পরীক্ষামূলক পদ্ধতি

মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, পরীক্ষা হল নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ, উপাদানের বৈচিত্র্য, সঠিকভাবে সংখ্যার মাধ্যমে ব্যক্ত করা। এই প্রকল্পগুলিকে কঠোরভাবে বিচার করার ক্ষেত্রে যে ধারাবাহিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তাকে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি বলে। Best-এর মতে, পরীক্ষামূলক পদ্ধতি হল সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত শর্তাধীনের মধ্যে কোনো ঘটনা বা সমস্যার কী ফল পাওয়া যায় বা কী ঘটতে পারে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা।

বৈশিষ্ট্য

আধুনিক বিজ্ঞানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হল পরীক্ষণ বা Experimentation। এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল

(1) প্রায়োগিক : প্রায়োগিক বলতে বোঝায় যে, বিষয়বস্তু বা ঘটনার মধ্যে যেসকল শব্দ বা শব্দসমূহ রয়েছে, তা সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা।

(2) চলের নিয়ন্ত্রণ: পরীক্ষণ পদ্ধতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল বিভিন্ন চলের নিয়ন্ত্রণ। পরিবেশের উপর পরীক্ষকের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে বলে পরীক্ষা পদ্ধতিতে অধিক সুবিধা পাওয়া যায়।

(3) নির্ভরাযাগ্য: পরীক্ষা পদ্ধতি অন্যান্য পদ্ধতি অপেক্ষা অধিক নির্ভরযোগ্য। পরিবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ, সুবিধা, বারবার পরীক্ষা গ্রহণ ইত্যাদি এই পদ্ধতির ফলাফলকে অধিক নির্ভরযোগ্য করে তোলে।

(4) পুনরাবৃত্তি: এটি পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এতে গবেষক তার পরীক্ষণের উদ্দীপক, প্রতিক্রিয়া ও পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করেন। এসব বর্ণনা অনুসারে পৃথিবীর যে-কোনো স্থানে গবেষণাটির পুনরাবৃত্তি করা যায়।

(5) নির্ভুলতা : পরীক্ষামূলক গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল নির্ভুল, মার্জিত এবং সংক্ষিপ্ত হয়।

(6) যথার্থতা : পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে যথার্থতা থাকে। যে উদ্দেশ্যে পরীক্ষণ করা হচ্ছে, সেই উদ্দেশ্য যদি পরীক্ষণের মাধ্যমে যথাযথ করা সম্ভব হয়, তবে বলা যাবে পরীক্ষণ পদ্ধতিটির যথার্থতা রয়েছে।

(7) নৈর্ব্যস্তিকতা: কোনো পরীক্ষা নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে যে-কোনো ব্যক্তি করলেই প্রত্যেক ক্ষেত্রে একই ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ পরীক্ষামূলক পদ্ধতির মধ্যে নৈর্ব্যক্তিকতা রয়েছে।

(৪) সহজসরল পদ্ধতি: পরীক্ষামূলক পদ্ধতির সাহায্যে শিক্ষার্থীকে অতি সহজে বিষয়টিকে বোঝানো সম্ভব হয় এবং এই পদ্ধতিকে শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ায় কাজে লাগালে শিক্ষার্থীরা বহুদিন ধরে বিষয়টিকে মনে রাখতে পারে।

(9) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অনুসরণ :‘মনোবিজ্ঞানে ব্যবহৃত অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় পরীক্ষণ পদ্ধতি অধিকমাত্রায় বিজ্ঞাননির্ভর। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির নিয়মকানুন পরীক্ষণ পদ্ধতিতে কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়।

(10) দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি: কোনো বিষয় পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিখলে সেই বিষয়বস্তু অনেকদিন মনে থাকে। 

(11) সাধারণীকরণ: অল্পসংখ্যক দৃষ্টান্ত বিশ্লেষণ করে একটি সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়াকে সাধারণীকরণ বলে। বিজ্ঞানী তার এই জ্ঞানের সাহায্যে অনুরূপ বিষয় সম্বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকেন।

আরও পড়ুন –

১। অনুসন্ধান পদ্ধতি কী? মনোবৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির লক্ষ্যগুলি কী কী?

২। অনুসন্ধানের পর্যায়গুলি আলোচনা করো।

৩। সংক্ষেপে মনোবৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতিগুলি আলোচনা করো। মনোবিজ্ঞানে অনুসন্ধান পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা লেখো।

৪। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

৫। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির প্রকারভেদ সংক্ষেপে আলোচনা করো।

৬। অংশগ্রহণকারী পর্যবেক্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।

৭। অংশগ্রহণকারী নয় পর্যবেক্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।

৮। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকে উন্নত করার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন?

৯। একটি আদর্শ পর্যবেক্ষণের বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি সম্পর্কে লেখো।

১০। পর্যবেক্ষণের তথ্য সংগ্রহকারী উপকরণগুলি (Tools of Observation) উল্লেখ করো।

১১। পর্যবেক্ষণমূলক অনুসন্ধানের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করো।

১২। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি বর্ণনা করো।

১৩। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি কাকে বলে? পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহার লেখো।

১৪। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশলগুলি সংক্ষেপে ‘আলোচনা করো।

১৫। নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতি কী? নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহের কৌশলগুলি আলোচনা করো।

১৬। সাক্ষাৎকার পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো।

১৭। নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।

Leave a Comment