অহিংসার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য লেখো

অহিংসার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য লেখো

অহিংসার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য লেখো
অহিংসার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য লেখো

অহিংসার প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য

গান্ধিজির তত্ত্ব অনুসারে অহিংসার প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে যে বিষয়গুলির কথা উঠে আসে সেগুলি হল-

(1) অহিংসার মধ্যে ভীরুতা বা কাপুরুষতার কোনো স্থান নেই

গান্ধিজির অহিংসা তত্ত্বে ভীরুতা বা কাপুরুষতার কোনো স্থান নেই। কারণ ভীতু ব্যক্তিরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রাম করতে চায় না। কাপুরুষতার চেয়ে হিংসাকে তিনি শ্রেয় বলে মনে করতেন। গান্ধিজি একথা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘যখন কাপুরুষতা ও হিংসার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে তখন আমি হিংসাকে বেছে নেব। যদিও আমি বিশ্বাস করি হিংসার চেয়ে অহিংসা অনন্ত গুণে শ্রেষ্ঠ। শাস্তিদানের চেয়ে ক্ষমা প্রদর্শন অনেক বেশি পুরুষোচিত কাজ।’

গান্ধিজির মতে, অহিংসা হল সাহসিকতার সর্বোচ্চ শিখর। অহিংসা প্রয়োগ করতে তরবারি চালনার তুলনায় অনেক বেশি সাহসের দরকার হয়। ভীরুতা কোনোভাবেই অহিংসার সঙ্গে খাপ খায় না। অহিংস তত্ত্ব অনুযায়ী, ব্যক্তি তার জীবনকে যখন অন্যের হাতে ছেড়ে রাখে তখনই তার জীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়। অর্থাৎ সমাজের কল্যাণের মাধ্যমেই ব্যক্তির কল্যাণ সাধিত হতে পারে।

(2) পূর্ণ অহিংসা বাস্তবে অসম্ভব

গান্ধিজি এটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, পূর্ণ অহিংসার প্রয়োগ বাস্তবে সম্ভব নয়। জীবন রক্ষা, স্বাস্থ্য রক্ষা এবং খাদ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে হিংসার প্রয়োজন হতে পারে। তিনি একথা সুস্পষ্টভাবে বলেছিলেন, হিংসা যদিও আইনসিদ্ধ নয় তবুও যখন তা আত্মরক্ষার জন্য বা অরক্ষিতকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়, তখন সেটা কাপুরুষোচিত নতি স্বীকারের তুলনায় অনেক বেশি সাহসিকতার কাজ। তবে গান্ধিজি এটা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, আমাদের ন্যূনতম হিংসার পথটিকে বেছে নিতে হবে। সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে হিংসার প্রয়োগ ঘটানো যেতেই পারে। দেশ ও জাতিভেদে একথা সমভাবে প্রযোজ্য। সাম্রাজ্যবাদী বর্বর শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ প্রত্যেক দেশবাসীর অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।

(3) অহিংসা হল আত্মিক শক্তি

গান্ধিজি মনে করতেন অহিংসা হল আত্মিক বা নৈতিক শক্তি। এ হল ঈশ্বরের শক্তি। এভাবে অহিংসার প্রকৃতিতে আধ্যাত্মিকতাকে আরোপ করতে চেয়েছিলেন গান্ধিজি। অহিংসার ধর্মীয় ভিত্তির উপরে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তিনি বলেছিলেন, ঈশ্বরে জীবন্ত বিশ্বাস ছাড়া অহিংসায় জীবন্ত বিশ্বাস অসম্ভব। ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে অহিংসার নীতি হল ঈশ্বরের আদেশ। সুতরাং হিংসা হল বলপ্রয়োগ বা পশুশক্তির বহিঃপ্রকাশ, কিন্তু অহিংসা হল সভ্য মানুষের হাতিয়ার।

(4) হিংসার প্রতিরোধে অহিংসা

গান্ধিজি মনে করতেন হিংসা দেখে অহিংসার সৈনিকরা পিছু হটবেন না। এক্ষেত্রে হিংসার জবাবে হিংসা ব্যবহার করতে তিনি কখনোই বলেননি। গান্ধিজির দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, নিষ্ঠুরতার জবাব নির্ভরতা দিয়ে দেওয়ার মধ্যে নিজের নৈতিক ও বৌদ্ধিক দেউলিয়াপনা প্রকাশ পায়। তাঁর বক্তব্য হল, অহিংসা দিয়ে হিংসাকে প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য অহিংস সৈনিককে আত্মপীড়নের মধ্য দিয়ে হিংসাকারীর হৃদয়ের পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে গান্ধিজি পথনির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘হয় তুমি চোরকে তারই অস্ত্র দিয়ে নিরস্ত্র করবে বা করার চেষ্টা করবে অথবা ভালোবাসা দিয়ে তাকে জয় করবে।’

সাধারণত হিংসা বলতে কাউকে আঘাত করা ও অহিংসা বলতে আঘাত না করা বা সমব্যাথী হওয়াকে বোঝায়। কোনো একটি প্রাণীর অসহ্য যন্ত্রণা বা কষ্ট নিরাময়ের পথ হিসেবে প্রাণীটির জীবনহানির প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডকে হিংসা হিসেবে না দেখে যন্ত্রনামুক্তির পথ হিসেবে দেখা উচিত।

(5) সামাজিক গুণ হিসেবে অহিংসা

অহিংসা হল প্রেমপ্রীতি, ভালোবাসার প্রকাশ। অহিংস আদর্শে দীক্ষিত ব্যক্তিরা অন্যের উপর কষ্ট চাপিয়ে না দিয়ে সর্বদা নিজেই তা বহন করে চলে। কারণ প্রতিপক্ষ কখনোই সদয়ভাব দেখাবে না বরং হিংসার আশ্রয় নেবে। তাই বলা যায়, হিংসার থেকে অহিংসার আদর্শ অনেক উন্নত এবং কঠিন। গান্ধিজি অহিংসাকে নিছক একটি ব্যক্তিগত গুণ বলে মনে করতেন না। তাঁর মতে, অহিংসা হল একটি সামাজিক গুণ, যা সামাজিকভাবে অনুশীলন করা যায়। গান্ধিজি চেয়েছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও অহিংসার প্রসার ঘটুক। এভাবে তিনি অহিংসা সম্পর্কিত প্রাচীন ধ্যানধারণাকে ব্যক্তিগত স্তর থেকে সামাজিক স্তরে এবং সামাজিক স্তর থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করতে চেয়েছিলেন।

(6) গণতন্ত্র ও অহিংসা

গান্ধিজি গণতন্ত্র ও অহিংসার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন, গণতন্ত্র ও হিংসা একসঙ্গে চলতে পারে না। যেসব রাষ্ট্র আজ শুধু নামেই গণতান্ত্রিক, তাদের হয় খোলাখুলি সর্বগ্রাসী রূপ নিতে হবে, নতুবা প্রকৃত গণতান্ত্রিক হয়ে উঠতে গেলে সাহসের সঙ্গে অহিংস হতে হবে। জাতীয় স্তরে অহিংসাকে স্বীকৃতি না দিলে সাংবিধানিক বা গণতান্ত্রিক সরকার বলে কিছু হতে পারে না।

(7) প্রতিহিংসার অবসান

ঘৃণা থেকে জন্ম নেয় বিদ্বেষ আর বিদ্বেষ থেকে জন্ম নেয় হিংসামূলক মানসিকতা। আবার এই হিংসা, প্রতিহিংসাকে প্রশ্রয় দেয়। অহিংস নীতিটির মধ্য দিয়ে মানুষের বিবেকের কাছে আবেদন জানানো হয়, যাতে ব্যক্তির মধ্যে সুকোমল বৃত্তি জাগরিত হয়। কোনো ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো কাজ করিয়ে নেওয়া উচিত নয়। প্রতিপক্ষের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের মাধ্যমে তার উগ্র মানসিকতার পরিবর্তন সাধনের চেষ্টা করতে হবে।

সর্বশেষে বলা যায়, অহিংসার চরিত্র হবে স্বতঃস্ফূর্ত, আত্মত্যাগমূলক এবং সমবেদনাযুক্ত।

(8) মানব ইতিহাসে অহিংসার গতিধারা

গান্ধিজি ছিলেন সত্যের পূজারি। গান্ধিজি অহিংসার গতি ও উদ্দেশ্যের সন্ধান পেয়েছিলেন মানবসভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসে, যা অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, মানুষ হিংসা পরিত্যাগ করে ক্রমশ অহিংসার পথে অগ্রসর হয়েছে। গান্ধিজির এই অহিংস নীতির বিচার-বিশ্লেষণের পশ্চাতে ছিল সনাতন হিন্দুধর্ম, ঈশ্বরের প্রতি গভীর আস্থা, সততা প্রভৃতি সদর্থক গুণাবলির ভূমিকা। গান্ধিদর্শনের মূল মন্ত্রই ছিল অহিংসা যা তিনি আমৃত্যু পর্যন্ত পালন করে গেছেন।

(9) সত্য ও অহিংসা ওতপ্রোতভাবে জড়িত

সত্য ও হিংসা পরস্পরের পরিপন্থী। অহিংসা গান্ধির কাছে ছিল পরমধর্ম, সত্যের আধার ও সনাতনরূপী। তাঁর মতে, সত্যাগ্রহী সকল প্রকার বঞ্চনা সহ্য করার জন্য প্রস্তুত থাকবে। গান্ধিজির মতানুসারে, কেবলমাত্র অহিংসার মাধ্যমেই সত্যের উপলব্ধি সম্ভব।

(10) অহিংস শিক্ষা প্রয়োজন

গান্ধিজি শিশুর অহিংসবোধের বিকাশের প্রয়োজনে সহায়ক শিক্ষা কর্মসূচির কথা বলেছেন। তেমনি আবার শিশুর সামাজিক বিকাশের লক্ষ্যে সমাজকেন্দ্রিক শিক্ষার কথাও বলেছেন।

গান্ধিজি বিশ্বাস করতেন অহিংস নীতির সম্পূর্ণ প্রয়োগ সম্ভব নয়। তাই তার মতানুসারে, কোন বৃহত্তর স্বার্থে অনেকসময় হিংসাত্মক পথ অবলম্বন করা যেতে পারে। এতদসত্ত্বেও গান্ধিজি সকল মানুষকে সত্য ও অহিংস পথেই ব্রতী হতে বলেছিলেন।

মূল্যায়ন

গান্ধিজির অহিংসা সম্পর্কিত তত্ত্বটি নানান দিক থেকে সমালোচিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

(1) অতিমাত্রায় ধর্মীয় প্রকৃতির

গান্ধিজি তাঁর অহিংস তত্ত্বকে যেভাবে ধর্মীয় ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং যেভাবে তিনি অহিংসার উপরে আধ্যাত্মিকতা আরোপ করেনে, অনেকে তা মেনে নিতে পারেননি। কারণ সমাজে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তি ধর্মানুরাগী বা আস্তিক নয়। তাছাড়া নিরীশ্বরবাদীরাও রয়েছেন। মার্কসবাদের মতাদর্শ অনুযায়ী, ধর্মকে আফিমের ই সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে অর্থাৎ তাঁরা ধর্মের গ্লানি থেকে মানুষকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। সমালোচকদের মতে, যাঁরা ধর্ম বা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না তাঁদের কাছে গান্ধিজির অহিংসার তত্ত্ব মূল্যহীন।

(2) বাস্তব রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক

আধুনিক যুগের বাস্তব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গান্ধিজির অহিংসা তত্ত্বকে সমালোচকরা অপ্রাসঙ্গিক বলে রায় দিয়েছেন। তাঁদের মতে বাস্তব রাজনীতি ক্ষমতাকেন্দ্রিক, সেখানে হক্স ও ম্যাকিয়াভেলির ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ধারণা অধিকতর প্রাসঙ্গিক। তাছাড়া বর্তমান যুগে সন্ত্রাসবাদের পৃথিবীতে অহিংস নীতির সাহায্যে রাষ্ট্রপরিচালনা কার্যত অসম্ভব। কাজেই আজকের বাস্তব রাজনীতিতে গান্ধিজির অহিংসা তত্ত্ব কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক নয়।

(3) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অচল 

গান্ধিজি তাঁর অহিংস নীতিকে ব্যক্তিগত ক্ষেত্র থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রয়োগের পক্ষপাতী ছিলেন। সমালোচকরা বর্তমান দুনিয়ার প্রেক্ষিতে এই ধারণাকে অচল বলে রায় দিয়েছেন। তাঁদের মতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সবক্ষেত্রেই অহিংস নীতির প্রয়োগ একটি সম্পূর্ণ ‘ইউটোপীয়’ বা কাল্পনিক ধারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

(4) স্ববিরোধিতা

গান্ধিজি একদিকে অহিংস নীতির পূর্ণ প্রয়োগের সপক্ষে সওয়াল করেন, অন্যদিকে নিজেই এর সাফল্য সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেছিলেন, অহিংস নীতিতে পুরোপুরি বিশ্বাসী কতজন মানুষ আছে, তাই নিয়ে তাঁর যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

(5) পরিবর্তনের ধীর প্রক্রিয়া

অহিংস পদ্ধতিটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যার ফলে এটি জরুরি পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয় না।

(6) জনগণের অংশগ্রহণ

অহিংস প্রতিরোধের কার্যকারিতা প্রায়শই বিপুল সংখ্যক জনগণের অংশগ্রহণের উপর নির্ভর করে থাকে। এই ধরনের গণঅংশগ্রহণ অনেকসময় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় এবং দমনমূলক পরিবেশের সৃষ্টি করে থাকে।

(7) ব্যক্তিগত বলিদান

অহিংস প্রতিরোধে অনেকসময় ব্যক্তিগত বলিদানের বিষয়টি জড়িত থাকে। যার মধ্যে কারাদণ্ড, শারীরিক নির্যাতন, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও অন্তর্ভুক্ত। তাই সমালোচকরা যুক্তি দেন যে এটি ব্যক্তি ও ব্যক্তিপরিবারের উপর অযাচিতভাবে চাপিয়ে দেওয়া বোঝা।

(8) নৈতিক আবেদন নির্ভর

অহিংসা পদ্ধতিতে অনুমান করা হয় যে, নিপীড়কদের নৈতিক আবেদন দ্বারা প্রভাবিত করা যেতে পারে। কিন্তু এটি নিপীড়কদের বিরুদ্ধে কার্যকর নাও হতে পারে। কারণ তারা এই নৈতিক বিবেচনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকেন।

(9) প্ররোচনা দান

অহিংস আন্দোলনের দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী অনেকসময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমন সময় বাইরে থেকে বিরোধীদের কোনোরূপ প্ররোচনামূলক কথায় বা আচরণে তাদের  আন্দোলন অহিংস রূপ ধারণ করে থাকে।

(10) সীমিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য

সমালোচকরা মনে করেন অহিংস আন্দোলন সর্বজনীন প্রযোজ্য নয়। কিছু কিছু সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই আন্দোলনকে সহিংসভাবে দমন করা হয়ে থাকে।

(11) অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যাঘাত

ধর্মঘট, বয়কটের মতো অহিংস আন্দোলন পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যাঘাত ঘটে থাকে। 

(12) ভুল ব্যাখ্যা এবং অপব্যবহার

সমালোচকদের মতে, গান্ধিজির অহিংসার নীতিটি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দ্বারা ভুল ব্যাখ্যা ও অপব্যবহারের ফলে সংঘটিত আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যটি প্রায়ই ব্যর্থতায় পরিণত হয়।

এতদসত্ত্বেও অহিংসা নীতির প্রনেতা হিসেবে গান্ধিজির অবদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। গান্ধিজি ছিলেন অদম্য আশাবাদী মহান পুরুষ। তাঁর কাছে, অহিংসার দ্বারাই অশুভ শক্তির দমন সম্ভব এবং ভালোবাসাই হল আত্মার শ্রেষ্ঠ রূপ। তিনি অহিংস নীতিকে তৎকালীন মানবসমাজের প্রয়োজনে এক কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে দেখেছেন। বিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সি ই এম জোডের মতানুযায়ী, গান্ধিজি হলেন একজন নৈতিকতাবাদী প্রতিভা এবং তাঁর পদ্ধতি আগত নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিদ্যমান থাকবে (Gandhi is a moral and his method belongs to coming generation) । তাই এই বিষয়ে মহাত্মার মহত্ত্ব ও কৃতিত্ব অস্বীকার করা যায় না।

আরও পড়ুন – গণতন্ত্রের পক্ষে যুক্তি দাও

Leave a Comment