লর্ড কার্জনের শিক্ষা সংক্রান্ত সুপারিশগুলি ব্যক্ত করো

লর্ড কার্জনের শিক্ষা সংক্রান্ত সুপারিশসমূহ
(1) প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত :
- দেশের শিক্ষার জন্য সরকার যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করবে, তার বেশিরভাগ অংশ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হবে।
- পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিকে অনুদান প্রদানের নীতি বর্জন করতে হবে।
- প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার একমাত্র মাধ্যম হবে মাতৃভাষা।
- গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠক্রমকে পৃথকভাবে রচনা করা হবে।
- প্রাথমিক শিক্ষায় নিযুক্ত শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
(2) মাধ্যমিক শিক্ষা সংক্রান্ত :
- কার্জন বলেছিলেন, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিদ্যালয় স্তরে কঠোর হলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক কম হবে। তাই মাধ্যমিক স্তরে কঠোর নিয়মকানুনের কথা বলা হয়।
- কোনো বিদ্যালয় সরকারি অনুমোদন না পেলে সেই বিদ্যালয়কে স্বীকৃত বিদ্যালয় বলে গণ্য করা হবে না।
- স্বীকৃত বিদ্যালয়গুলিই কেবলমাত্র প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য ছাত্র ভরতি করতে পারবে।
- বিদ্যালয়গুলিতে সরকারি পরিদর্শন চালু থাকবে।
- বিদ্যালয়গুলিতে ফাইনাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করে বহুমুখী পাঠক্রম চালু করতে হবে।
(3) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সংক্রান্ত :
- বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিয়োগ এবং গবেষণা ও ছাত্রাবাস পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হবে।
- সেনেটের সদস্য সংখ্যা সীমাবদ্ধ করা হবে।
- কলিকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে 20 জন এবং পাঞ্জাব ও এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে 15 জন করে ‘Fellow’ নেওয়া হবে।
- কলেজ পরিদর্শন ও অনুমোদন ব্যবস্থার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হবে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাল নির্ধারণের ক্ষমতা সপারিষদ বড়োলাটের উপর অর্পিত হয়।
(4) বৃত্তিশিক্ষা সংক্রান্ত :
- বিভিন্ন বৃত্তিতে শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
- কৃষিবিদ্যা শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- বিদেশে উচ্চতর কারিগরি শিক্ষা অর্জনের জন্য বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করা হয়।
- চারুকলা ও শিল্পকলার প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
(5) নারীশিক্ষা সংক্রান্ত :
- নারীশিক্ষার জন্য পৃথকভাবে অর্থ বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
- নারীশিক্ষার প্রসারে পৃথক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
- বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গৃহীত হয়।
- বিদ্যালয় পরিদর্শনের জন্য মহিলা পরিদর্শক নিয়োগকে জোর দেওয়া হয়।
(6) শিক্ষক-শিক্ষণ সংক্রান্ত :
- শিক্ষকদের জন্য শিক্ষক-শিক্ষণ কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
- শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো ও পৃথক প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর