প্রান্তীয় বাল্যের সময়কাল উল্লেখ করো। প্রান্তীয় বাল্যের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য ও চাহিদাগুলি সম্পর্কে যা জানা লেখো

প্রান্তীয় বাল্যের সময়কাল উল্লেখ করো। প্রান্তীয় বাল্যের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য ও চাহিদাগুলি সম্পর্কে যা জানা লেখো

প্রান্তীয় বাল্যকাল

9 থেকে 11 বছর পর্যন্ত সময়কালকে বলে প্রান্তীয় বাল্যকাল। বিদ্যালয়ের শিক্ষায় চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত এই স্তরের অন্তর্ভুক্ত। অনেকে এই স্তরকে উচ্চ প্রাথমিক স্তর বা Upper Primary Stage বলেন।

প্রান্তীয় বাল্যের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য

(1) দৈহিক বিকাশ: প্রারম্ভিক বাল্যকালের থেকে এই স্তরে দেড় থেকে দুই ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বায় বাড়ে। ওজন বছরে ছয়-সাত পাউন্ডের বেশি বাড়ে না। ওজন ও দৈর্ঘ্যের দিক থেকে ছেলেরা মেয়েদের দিক দিয়ে একটু এগিয়ে থাকে।

(2) মানসিক বিকাশ: তাদের আগ্রহের বস্তুর পরিধি অনেক বেড়ে যায়। সবকিছু জানার জন্য কৌতূহল প্রকাশ করে। যেমন-ঐতিহাসিক ঘটনা, বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রভৃতি।

(3) প্রাক্ষোভিক বৈশিষ্ট্য: প্রাক্ষোভিক দিক দিয়ে এই সময়কে অনেকে চিন্তাভাবনামুক্ত সময়কাল হিসেবে বিবেচনা করেছেন। আনন্দ-উচ্ছলতা বেশি দেখা যায়। তবে শিশুসুলভ ভয়ের বদলে তাদের মধ্যে যথাযথ প্রত্যক্ষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভয়ের ভাব দেখা যায়।

(4) সামাজিক বৈশিষ্ট্য: এই বয়সে শিক্ষার্থীদের দলের প্রতি বেশি আনুগত্য লক্ষ করা যায়। একা একা খেলার চেয়ে দলের সদস্যদের সঙ্গে খেলতে তারা বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে। সহযোগিতা, প্রতিযোগিতা,  সহানুভূতি প্রভৃতি সামাজিক গুণগুলি দেখতে পাওয়া যায়।

প্রান্তীয় বাল্যের চাহিদা

(1) দৈহিক চাহিদা: প্রান্তীয় বাল্যকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দৈহিক চাহিদা আছে। যেমন-খাদ্যের চাহিদা ও সক্রিয়তার চাহিদা।

  •  খাদ্যের চাহিদা: এইসময়ে যেহেতু তারা বেশি চঞ্চল, তাই তাদের মধ্যে খিদের চাহিদা প্রবল হয়। তারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী খাদ্যের প্রত্যাশা করে এবং না পেলে রাগ করে।
  • সক্রিয়তার চাহিদা: এই স্তরে শিক্ষার্থী একা চুপচাপ থাকতে পারে না। যে-কোনো কাজে বা খেলায় বা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকে। তাদের সর্বদা সক্রিয়তা লক্ষ করা যায়।

(2) মানসিক চাহিদা :

  • দায়িত্বপালন: এইসময় শিক্ষার্থী বিভিন্ন দায়িত্ব পেলে খুশি হয় ও তা দায়িত্ব সহকারে পালন করে।
  • কল্পনা ও জ্ঞানের চাহিদা: বিভিন্ন গল্প শোনার মাধ্যমে তাদের কল্পনার চাহিদা পরিতৃপ্তি লাভ করে।
  • অনুকরণের চাহিদা: বয়স্ক ব্যক্তি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বাবা-মা সকলের আচরণ শিক্ষার্থীরা অনুকরণ করতে চায়।

(3) সামাজিক চাহিদা:

  • দলবদ্ধ হওয়ার চাহিদা: প্রান্তীয় বাল্যকালে দলবদ্ধ হওয়ার চাহিদা সৃষ্টি হয়। শিশুরা দল বেঁধে খেলা করে।
  • সহযোগিতার চাহিদা: প্রান্তীয় বাল্যকালে সহযোগিতার চাহিদা লক্ষ করা যায়, ফলে কোনো বন্ধু সমস্যায় বা বিপদে পড়লে তারা সমাধানের জন্য এগিয়ে আসে।

সামাজিক স্বীকৃতির চাহিদা: শিশুরা বিভিন্ন নতুন নতুন কাজ করতে চায়, সমাজে তার নিজের পরিচিতি হোক, এটা সে আশা করে।

আরও পড়ুন – মনোবিজ্ঞানে অনুসন্ধানের পদ্ধতিসমূহ প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment