কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের (1917-1919 সাল) সুপারিশগুলি আলোচনা করো

কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশসমূহ
(1) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সুপারিশ:
(1) স্যাডলার কমিশনের সুপারিশে প্রথমেই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত শিক্ষণধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার কথা বলা হয়।
(2) ঢাকায় একটি প্রকৃত শিক্ষণধর্মী আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
(3) সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ব্যবস্থা থাকার সুপারিশ করা হয়।
(4) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতা দূরীভূত করার উদ্দেশ্যে সিনেট ও সিন্ডিকেটের পরিবর্তে প্রতিনিধিত্বমূলক কোর্ট ও কার্যনির্বাহী সংস্থা গঠনের সুপারিশ স্যাডলার কমিশনে করা হয়।
(5) শিক্ষক-শিক্ষণের জন্য পৃথক শিক্ষা বিভাগ স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
(6) ছাত্রদের কল্যাণ তথা স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য একজন ডাইরেক্টর অফ ফিজিকাল এডুকেশন নিয়োগ করা সম্পর্কেও এই কমিশনে উল্লেখ করা হয়।
(2) নারীশিক্ষা:
- 15-16 বছরের হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মেয়েদের জন্য ‘পর্দা স্কুল’ গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।
- নারীদের শিক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড ও বিশেষ পাঠক্রম প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।
(3) বৃত্তিমূলক শিক্ষা : বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য স্যাডলার কমিশনে ব্যাবহারিক বিজ্ঞান, কারিগরি বিজ্ঞান প্রভৃতি পাঠক্রমে স্থান দেওয়ার বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়।
(4) শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনা:
- বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে নিজস্ব পরিচালন কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়।
- বিশ্ববিদ্যালয়-এর কার্য পরিচালনার নিয়মকানুন অপেক্ষাকৃত সরল করার মতামত দেওয়া হয়।
(5) শিক্ষক-শিক্ষণ: (a) প্রত্যেক মহাবিদ্যালয়ে একটি পৃথক শিক্ষাবিজ্ঞান বিভাগ স্থাপন করতে হবে। (b) BA (Pass) ও ইন্টারমিডিয়েট পাঠক্রমে ‘শিক্ষাবিজ্ঞান’ নামক নতুন বিষয় সংযোজন করতে হবে। স্যাডলার কমিশনে শিক্ষার বিভিন্ন স্তর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা হলেও, তা সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিল না। ভারতবর্ষের মতো দারিদ্র্য দেশের পক্ষে সেই সময় আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ চালানো ছিল খুবই কষ্টসাধ্য। তা সত্ত্বেও বলা যায়, সর্বভারতীয় শিক্ষার ইতিহাসে স্যাডলার কমিশনের গুরুত্ব ছিল অনস্বীকার্য।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর