শিশুর জীবনবিকাশে পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কীয় ক্যাটেল, অটোক্লিয়েনবার্গ পরীক্ষা আলোচনা করো। বংশধারার নীতিগুলি সম্পর্কে লেখো
শিশুর জীবনবিকাশে পরিবেশের প্রভাব সম্পকীয় পরীক্ষা
(1) ক্যাটেল (Cattle) : ক্যাটেল আমেরিকার কয়েকজন বিজ্ঞানীর বংশপঞ্জী নিয়ে সমীক্ষা করেন। তিনি এই সমীক্ষায় দেখেন যে, ব্যক্তির বৌদ্ধিক বিকাশ আর্থিক সংগতি, সামাজিক পরিবেশ ও অন্যান্য সুযোগসুবিধার উপর নির্ভর করে।
(2) আট ক্লিনবার্গ (Otto Klineberg): শিশুর জীবনে পরিবেশের প্রভাব সম্পর্কে গ্রাম ও শহরের নিগ্রো ছেলেদের উপর তিনি পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি সমীক্ষায় দেখেন, যে-সমস্ত নিগ্রো ছেলে গ্রাম থেকে শহরে এসেছিল, তারা গ্রামের নিগ্রো ছেলেদের থেকে বেশি বুদ্ধিমান।
(3) এায়লম্যানের পরীক্ষা: আইওয়া (Iowa) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়েলম্যান ও তাঁর সঙ্গীগণ শিশুর জীবনবিকাশের ক্ষেত্রে পরিবেশের পরিবর্তন অনুসন্ধান করেন এবং দেখলেন যে পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তির বুদ্ধ্যঙ্কের পরিবর্তন ঘটে। তাঁর গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যে পরিবেশ যত ভালো হবে বুদ্ধ্যঙ্ক তত বেশি হবে। আর পরিবেশ খারাপ হলে বুদ্ধ্যঙ্কও কমে যাবে। সুতরাং উপরোক্ত সমীক্ষাগুলি শিক্ষা বা জীবনবিকাশের ক্ষেত্রে পরিবেশের প্রবল প্রভাবকে সমর্থন করে। তবে আধুনিক শিক্ষাবিদগণের মতে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য বংশধারা ও পরিবেশ উভয়ই প্রয়োজন।
বংশধারার নীতি (Law of Heredity)
বিজ্ঞানীরা পর্যালোচনা করে বংশধারার তিনটি নীতির উল্লেখ করেছেন – সাদৃশ্যের নীতি, বৈচিত্র্যের নীতি এবং গড়াভিমুখীর নীতি।
(1) সাদৃশ্যের নীতি (Law of Similarity): সাদৃশ্যের নীতি হল সমজাতীয় প্রাণী সমজাতীয় প্রাণীরই জন্ম দেয়। যেমন-মানুষের শিশু মানুষ হয়, গোরুর বাচ্চা বাছুর হয় ইত্যাদি।
(2) বৈসাদৃশ্যের নীতি (Law of Dissimilarity): এই নীতিতে বলা হয়-সমজাতীয় প্রাণী সমজাতীয় প্রাণীর জন্ম দিলেও তাদের মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য দেখা যায়। যেমন- অনেক শিশু তার পিতা-মাতার মতো হয় না। অর্থাৎ উন্নত মেধাসম্পন্ন পিতা-মাতার সন্তান স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন হতে পারে।
(3) গড়াভিমুখীর নীতি (Law of Avarage): এই সূত্রে বলা হয়েছে, বৈচিত্র্য বা পার্থক্যের একটা নিয়ম আছে। অর্থাৎ বংশধারার প্রবণতা হল গড়ের দিকে যাওয়া। পিতা-মাতা উভয়েই যদি খুব লম্বা ও মোটা হয়, সেক্ষেত্রে তাদের সন্তান পিতা-মাতার থেকে লম্বা ও খর্বাকার হবে অর্থাৎ গড়ের দিকে যাওয়ার প্রবণতা থাকে।