শিক্ষার লক্ষ্য সম্পর্কে রামমোহন রায়ের অভিমত কী ছিল সংক্ষেপে আলোচনা করো। রামমোহন রায়ের কর্মজীবনের প্রথমাংশ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো

শিক্ষার লক্ষ্য
রামমোহন রায়ের শিক্ষার লক্ষ্য ছিল-
(1) ব্যক্তির বিকাশ ও সমাজ বিকাশের মধ্যে সমন্বয়সাধন : ব্যক্তিকে ও সমাজকে বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা গেলে মানুষের মধ্যে যুক্তিবাদী সংস্কারমুক্ত মানসিকতা গড়ে উঠবে। যুগসঞ্চিত স্থিতিশীল ধ্যান-ধারণাকে সে আর নির্বিচারে গ্রহণ করবে না। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিচারমনস্কতা জাগিয়ে তোলাই ছিল রামমোহনের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।
(2) প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য জ্ঞানের সমন্বয়: প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যা কিছু ভালো তার বাস্তবসম্মত সমন্বয়ে আধুনিক কালের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর রামমোহন অধিক গুরুত্ব দেন।
(3) ব্যন্ত্রিকল্যাণ ও সমাজকল্যাণের সমন্বয়সাধন: যে দর্শনচর্চা ব্যক্তি ও সমাজের যুগপৎ উন্নতি ঘটাতে পারে না, সে শিক্ষা রামমোহনের কাম্য ছিল না। তাঁর শিক্ষার লক্ষ্য ছিল ব্যক্তিকল্যাণ ও সমাজকল্যাণের সমন্বয়সাধন। ব্যক্তিকে ও সমাজকে বিজ্ঞানচেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, যুক্তিবাদী সংস্কারমুক্ত মন নিয়ে সব কিছু বিচার করে তা প্রমাণ করার মানসিকতা এই ছিল রামমোহনের শিক্ষার উদ্দেশ্য।
রামমোহন রায়ের কর্মজীবনের প্রথমাংশ
রামমোহন রায় প্রথম জীবনে নিজেদের পারিবারিক বিষয়-সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন। পরে কলকাতায় কোম্পানি কাগজের ব্যবসা, সিভিলিয়ানদের টাকা ধার দেওয়াসহ বিভিন্ন ব্যবসা করতেন। রামমোহন নয় বছর এই চাকরি করেন। তার মধ্যে মাত্র 1 বছর 9 মাস ভারতের বিভিন্ন স্থানে ইস্ট ইন্ডিয়ার অধীনে কাজ করেন। বাকি কয় বছর তিনি ডিগবী সাহেবের খাস মুন্সির কাজ করেন। এজন্য লোকে তাঁকে ডিগবী সাহেবের দেওয়ান বলত।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর