প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যা ও তার সমাধানগুলি আলোচনা করো
প্রাক্ প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যা
প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যাগুলি হল নিম্নরূপ-
(1) দক্ষ শিক্ষিকা ও সহকারীর অভাব: প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষায় যেসব শিশুরা পড়াশোনা করে, তাদের বয়স সাধারণত আড়াই বা তিন বছর থেকে 6 বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। এইসব শিশুদের বিদ্যালয়ে সামলানো অত্যন্ত কঠিন কাজ। এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষিকা ও দক্ষ সহকারীর। বিদ্যালয়গুলিতে এর যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
(2)পরিকাঠামো : যথাযথ পরিকাঠামো, যেমন- খেলাধুলোর সামগ্রী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শৌচালয় ইত্যাদির অভাব রয়েছে।
(3) খরচসাপেক্ষ: সরকারি বিদ্যালয় না থাকায় এই ধরনের বিদ্যালয় খরচসাপেক্ষ। ফলে সব বাবা-মায়ের পক্ষে এই ধরনের বিদ্যালয়ে পড়ানোর মতন আর্থিক সামর্থ্য নেই।
(4) পড়াশোনার চাপ: শিক্ষার্থীদের বয়সের তুলনায় বেশি পড়ানো হয় যা শিশুর মধ্যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভয়ের সৃষ্টি করে। অনেকসময় শিশু পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফ্যালে।
(5) ব্যাগের ভার : এই বয়সের শিক্ষার্থীদের বই, খাতা-সহ অনেক কিছু ব্যাগের মধ্যে থাকে। এই ব্যাগের ভার শিশুশিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠের প্রতি ভীতি সঞ্চার করে।
(6) শিশুর স্বাস্থ্য: ব্যাগের ভারে শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।
(7) শিক্ষাদান পদ্ধতি: পাঠদান পদ্ধতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ। শিশুদের পাঠদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামের মাধ্যমে ছড়ার মাধ্যমে, খেলাধুলার মাধ্যমে পড়ানো উচিত। কিন্তু অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পাঠদান পদ্ধতি মনোবিজ্ঞানসম্মত নয়।
প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যাসমাধানের উপায়
(1) পাঠকদের জুটি দূর করা: পাঠক্রমের ত্রুটি দূর করার জন্য কর্ম অভিজ্ঞতালাভের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তা ছাড়া পাঠক্রম প্রণয়নের সময় নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
(2) বিদ্যালয় স্থাপন : অধিক সংখ্যক বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রতিটি গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
(3) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষা : বিদ্যালয়গুলিতে উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের প্রয়োজন। তার জন্য অধিক সংখ্যক ট্রেনিং কলেজ স্থাপন ও ট্রেনিং প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(4) শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার: পাঠকে শিক্ষার্থীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের শিখন সহায়ক উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে যে শিক্ষা উপকরণের জন্য অর্থ দেওয়া হয়, তা যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে কি না তা লক্ষ রাখতে হবে।
(5) সঠিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা: আধুনিক কালে পরীক্ষার উপর গুরুত্ব না দিয়ে মূল্যায়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা যায়। তাই আধুনিক ও যুগোপযোগী মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
(6) দরিদ্র হাতদের সুযোগ দান: যারা দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র, তাদের জন্য বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন – আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর