পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশনায় রামমোহনের অবদান লেখো

পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশনায় রামমোহনের অবদান লেখো

পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশনায় রামমোহনের অবদান লেখো
পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশনায় রামমোহনের অবদান লেখো

পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্র প্রকাশনায় রামমোহনের অবদান

(1) পতপত্রিকার সঙ্গে যুক্ত: জনশিক্ষা প্রসারের জন্য বিভিন্ন পুস্তক ভিন্ন রামমোহন কয়েকখানি পত্রপত্রিকা ও সংবাদপত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে নিজেকে নিযুক্ত করেছিলেন। যেমন- 1821 সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ব্রাত্মনিক্যাল ম্যাগাজিন (Brahmanical Magazine), ব্রাহ্মণ সেবধি এই দুটি পত্রিকাই রামমোহন রায় প্রকাশ করেন। শ্রীরামপুরের মিশনারিদের আক্রমণের হাত থেকে হিন্দু একেশ্বরবাদ ও বেদান্ত, 1821 সালে প্রকাশিত- সম্বাদ কৌমুদী।

1822 সালের 12 এপ্রিলে প্রকাশিত- মিরাৎ-উল-আখবর, এইগুলির মধ্যে প্রথমটি ইংরেজিতে ও বাংলায়, দ্বিতীয়টি বাংলায় এবং শেষেরটি ফারসি ভাষায় প্রকাশিত হত। ‘সম্বাদ কৌমুদী’ খুব উচ্চাঙ্গের সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল। এতে বহু সারগর্ভ প্রবন্ধাদি থাকত। তাঁর এই সমস্ত পত্রিকাগুলিতে ধর্মীয়, নৈতিক ও রাজনীতি বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনা, বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হত। সাংবাদিক হিসেবেও রামমোহন রায় যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সমাজের শিক্ষিত শ্রেণির মধ্যে মৌলিক চিন্তাভাবনা ও সমাজসচেতনতা পৌঁছে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে তিনি সংবাদপত্রকে বেছে নেন। প্রথম প্রকাশিত কাগজটি হল- বেঙ্গল গেজেট (1818 সাল)।

(2) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন : রামমোহন সংবাদপত্রে স্বাধীনতার অত্যন্ত পক্ষপাতী ছিলেন। সেজন্য 1823 সালে যখন সংবাদপত্রের জন্য গভর্নমেন্টের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে, এই নিয়ম প্রচলন হয়, তখন তিনি এটি নিষ্প্রয়োজন ও অসম্মানসূচক মনে করে ‘মিরাৎ-উল-আখবর’ বন্ধ করে দেন। কেবলমাত্র পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েই রামমোহন তাঁর কর্তব্য শেষ করেননি। এই আইন রেজিস্ট্রিকৃত হওয়ার পূর্বে এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অপহারক বলে তিনি তাঁর কয়েকজন কলিকাতাস্থ বন্ধুর সঙ্গে প্রতিবাদ করেন 1823 সালের 31 মার্চ। তাতে কোনো ফল না হওয়ায় তিনি ইংল্যান্ডের অধিপতির নিকট এক আবেদনপত্র পাঠিয়েছিলেন। রামমোহন আর কোনো পত্রিকা পরিচালনা না করলেও মুদ্রণযন্ত্র বিষয়ক আইন বিদ্যমান থাকাকালেই মাস তিনেকের জন্য আর একখানি পত্রিকার অন্যতম স্বত্বাধিকারী হয়েছিলেন। এটি হল 9 মে, 1829 সালে প্রকাশিত বেঙ্গল হ্যারল্ড।

সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, ভারত পথিক রাজা রামমোহন রায় পত্রপত্রিকা প্রকাশনা ও সংবাদপত্রের প্রকাশনার ক্ষেত্রে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের কাছে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন তা এককথায় অনবদ্য।

আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment