কৈশোরকালীন বিকাশ জীবনবিকাশের অন্য স্তরগুলি থেকে পৃথক কেন? বয়ঃসন্ধিকালকে দুঃখকষ্টের কাল বলা হয়- এই সমস্যার। মনোবিজ্ঞানসম্মত সমাধান নির্দেশ করো

কৈশোরকালীন বিকাশ জীবনবিকাশের অন্য স্তরগুলি থেকে পৃথক কেন? বয়ঃসন্ধিকালকে দুঃখকষ্টের কাল বলা হয়- এই সমস্যার। মনোবিজ্ঞানসম্মত সমাধান নির্দেশ করো

কৈশোরকালীন বিকাশ জীবনবিকাশের অন্য স্তরগুলি থেকে পৃথক হওয়ার কারণ

কৈশোরকালীন বিকাশ জীবনবিকাশের অন্য স্তরগুলি থেকে পৃথক-এর পশ্চাতে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। মূলত কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিকালের বিকাশগত বৈশিষ্ট্য এবং চাহিদাসমূহ এই স্তরকে অন্য স্তর থেকে আলাদা করেছে। শৈশব ও বাল্য স্তরে যে বিকাশগত বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়, সে তুলনায় কৈশোর স্তরে দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক-সমস্ত দিক থেকে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। এই স্তরে শিক্ষার্থীদের বিমূর্ত চিন্তন ক্ষমতার (Capacity for abstract thinking) বিকাশ হয়। দয়া, যূথবদ্ধতা, ভালোবাসা, আদর্শবোধ, সামাজিকতা, আত্মনির্ভরতা, মনোযোগ ইত্যাদি গুণগুলিরও বিকাশ হয়। কৈশোরকালের সবথেকে বড়ো পরিবর্তন হল যৌন পরিবর্তন। এই বয়সের ছেলেমেয়েদের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন হরমোন নিঃসারিত হয়। এর ফলেই বালকেরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষে এবং বালিকারা প্রাপ্তবয়স্কা স্ত্রীলোকে পরিণত হয়।

সুতরাং বলা যায় যে, বাল্যকালে যে বিকাশ আংশিক পর্যায়ে থাকে কৈশোরে এসে সেটি পরিপূর্ণতার দিকে এগিয়ে যায় ও দেহ-মনে নানান পরিবর্তন দেখা যায়। এই কারণেই কৈশোরকালকে জীবনবিকাশের অন্যান্য স্তরগুলির থেকে পৃথক বলা হয়।

বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাসমাধানে মনোবিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ

বয়ঃসন্ধিকালকে দুঃখকষ্টের কাল বলা হয়- এই সমস্যার মনোবিজ্ঞানসম্মত সমাধান প্রয়োজন। কৈশোর স্তরের চাহিদাসমূহের অতৃপ্তির কারণে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। মূলত যৌন চাহিদা, দুঃসাহসিক অভিযানের চাহিদা, স্বাধীনতার চাহিদা, আত্মপ্রতিষ্ঠার চাহিদা-এগুলি বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই বিভিন্ন চাহিদাগুলি পরিতৃপ্তির জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উক্ত সমস্যার সমাধানে কিছু মনোবিদ্যাসম্মত পদক্ষেপ হল-

(1) শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

(2) দলগত কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে ও উৎসাহ দিতে হবে।

(3) পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে।

(4) সৃজনশীল কাজে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে হবে।

(5) জ্ঞানার্জনের চাহিদাপূরণে সহায়তা করতে হবে।

(6) হাতেকলমে কাজের সুযোগ দিতে হবে।

(7) নেতৃত্বদানে উৎসাহ দিতে হবে।

(8) ব্যক্তিসত্তার বিকাশে এবং সামগ্রিক বিকাশে সহায়তা করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন – মনোবিজ্ঞানে অনুসন্ধানের পদ্ধতিসমূহ প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment