এদেশে শিক্ষাপ্রসারে রামমোহন রায় খ্রিস্টান মিশনারিদের কীভাবে সহায়তা করেছিলেন? রামমোহন রায় সংস্কৃত ভাষাশিক্ষাকে জ্ঞানের প্রসারের অন্তরায় বলে মনে করেছিলেন কেন

শিক্ষাপ্রসারে খ্রিস্টান মিশনারিদের সহায়তা
কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সময় (1814 খ্রিস্টাব্দ) থেকেই রামমোহন খ্রিস্টান মিশনারিদের শিক্ষা বিস্তারের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করেন এবং ভারতে এক নতুন শিক্ষা আন্দোলন গড়ে তোলেন। ভারতে মিশনারিরাই প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রবর্তন করেন। ভারতবাসীকে এই নতুন শিক্ষার আলোকে আলোকিত করার প্রয়োজনীয়তা রামমোহন উপলব্ধি করেন। তাঁর মতে বিজ্ঞান, ইতিহাস, ইংরেজি ভাষা-সাহিত্য এইসব বিষয়ের চর্চার মধ্য দিয়ে প্রাচ্য শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এইসময় ডেভিড হেয়ারের মতো উদার মানুষের আন্তরিক সহায়তা বাংলায় নব্য শিক্ষাধারার প্রবর্তনে এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছিল। নবজাগরণের পথিকৃৎ রামমোহন অনুভব করেন- পাশ্চাত্য শিক্ষা, দেশের মানুষের মধ্যে নতুন চেতনার উন্মেষ ঘটাবে যা সমগ্র পৃথিবীকে নতুন করে জানার ও দেখার দৃষ্টি দেবে। এই শিক্ষার মাধ্যমেই ক্রমশ গড়ে উঠবে নতুন নির্মল সচেতন ভারত।
সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা জ্ঞানের প্রসারের অন্তরায়
রামমোহনের মতে, সংস্কৃত এতই কঠিন যে, ভাষা আয়ত্ত করতেই প্রায় সারাজীবন কেটে যায়। বহুদিন ধরে এই কারণেই সংস্কৃত ভাষা জ্ঞানের প্রসারের পক্ষে বাধাস্বরূপ বলে মনে করতেন তিনি। সংস্কৃত ব্যাকরণের খুঁটিনাটি আয়ত্ত করতেই যদি শিক্ষার্থীর প্রথম জীবনের শ্রেষ্ঠ দ্বাদশ বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে সে শিক্ষায় উন্নতির আশা কোথায়? তাই রামমোহন লর্ড আমহার্স্টকে লেখা চিঠিতে লেখেন যে সংস্কৃত-শিক্ষাপ্রণালী দেশকে অজ্ঞানতার অন্ধকারে রাখার প্রকৃষ্ট উপায়।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর