ইসলামীয় শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম কী? মক্তবে পাঠক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল? মক্তবে শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষারম্ভ অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখো

ইসলামীয় শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম কী? মক্তবে পাঠক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল? মক্তবে শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষারম্ভ অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখো

ইসলামীয় শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম কী? মক্তবে পাঠক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল? মক্তবে শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষারম্ভ অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখো
ইসলামীয় শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম কী? মক্তবে পাঠক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল? মক্তবে শিক্ষাদান পদ্ধতি এবং শিক্ষারম্ভ অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখো

ইসলামীয় শিক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম হল মক্তব। মক্তব প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করত। মসজিদ বা মসজিদ সংলগ্ন কোনো গৃহে ‘মক্তব’ বসত। মক্তবে শিশুদের শিক্ষাদানের দায়িত্ব ছিল মৌলবির ওপর। রাষ্ট্র বা বিদ্যানুরাগী ধনী ব্যক্তি অথবা স্থানীয় অধিবাসীরা মৌলবিদের নিয়োগ করতেন।

পাঠক্রম

মক্তবে পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হল-

(1) মক্তবে লিখন, পঠন এবং সাধারণ গণিত ইত্যাদি বিষয় পাঠক্রমে ছিল।

(2) শিক্ষার শুরুতে আরবি, ফারসি ভাষার বর্ণমালা শেখানো হত।

(3) 7 বছর বয়সে পবিত্র কোরান পাঠ শুরু হত। পাঠক্রমে কোরানের নির্বাচিত অংশ থেকে পাঠ মুখস্থ করতে হত।

(4) নামাজ পাঠ এবং ধর্মীয় আচরণগুলি শেখানো হত।

(5) ফতিয়ার মন্ত্রগুলির শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করা শেখানো হত।

(6) ফারসি ব্যাকরণ পড়ানো হত।

(7) আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বিকাশের জন্য দরবেশ ও পয়গম্বরদের জীবনী ও বাণী, ফারসি কাব্যগাথা ইত্যাদি পড়ানো হত।

শিক্ষণ পদ্ধতি

মক্তবের শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল মূলত ব্যক্তিকেন্দ্রিক। এখানে যে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হত, তা হল-

(1) মৌখিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হত। শুনে শুনেই শিক্ষার্থীরা লিখত।

(2) সাধারণত কোনো লিখিত বই অনুসরণ করা হত না।

(3) আকবরের সময় আগে লেখা শেখানো হত, পরে পড়ানো হত।

(4) হাতের লেখার উপর গুরুত্ব দেওয়া হত।

(5) শিশুদের দিয়ে বারবার উচ্চারণ করিয়ে কোরানের কিছু পঙ্ক্তি মুখস্থ করানো হত।

(6) শিশুর 7 বছর বয়স হলে বর্ণমালার সঙ্গে পরিচয় করানো হত।

(7) ধুলো অথবা কাঠের বোর্ডে আঙুল বুলিয়ে অক্ষর অভ্যাস করানো হত।

(8) শিশু শিখে গেলে স্বাধীনভাবে লেখা ও পড়ার সুযোগ দেওয়া হত।

শিক্ষারম্ভ অনুষ্ঠান

(1) শিক্ষারম্ভ : ব্রাহ্মণ্য শিক্ষাব্যবস্থার ন্যায় বিদ্যারম্ভ অনুষ্ঠানের মতো একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুসলিম শিশুদের শিক্ষাদানের পর্ব শুরু হত। এই অনুষ্ঠানটি বিসমিল্লাহ্ নামে পরিচিত। সাধারণত শিশুর বয়স চার বছর চার মাস চার দিন হলে তাকে নতুন পোশাক পরিয়ে আখেনজি অর্থাৎ শিক্ষক- এর সামনে বসানো হত। শিক্ষার্থীর হাতে থাকত একটি রৌপ্যনির্মিত ফলক এবং তার উপর লেখা থাকত কোরানের একটি পঙ্ক্তি। আখেনজি শিক্ষার্থীকে বারংবার এটি মুখস্থ করাতে সাহায্য করতেন। এরপর সাত বছর বয়সে কলমা পাঠ-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর প্রকৃত শিক্ষা শুরু হত।

আরও পড়ুন – বিকাশের স্তরসমূহ প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment