ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষা ব্যবস্থা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করো

ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষা ব্যবস্থা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা কর

ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষা ব্যবস্থা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করো
ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় পরীক্ষা ব্যবস্থা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করো

পরীক্ষা ব্যবস্থা

ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থায় আধুনিক যুগের ন্যায় পরীক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত ছিল না। শিক্ষক যখন মনে করতেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সেই স্তরের জন্য সম্পূর্ণ হয়েছে, তখনই তিনি তাদের পরীক্ষা নিতেন এবং পরবর্তী স্তরের জন্য নির্বাচন করতেন। তা ছাড়া আলোচনা ও বিতর্কসভায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাঝে যোগ্যতার মূল্যায়ন করা হত। কৃতী ছাত্রদের বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। শিক্ষা শেষ হলে দক্ষতা অর্জনের নিদর্শনস্বরূপ ডিগ্রি প্রদানেরও ব্যবস্থা ছিল। যারা ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করত, তাদের ‘আলিম’, যুক্তিশিক্ষায় পারদর্শিতা অর্জনকারীদের ‘ফাজিল’ এবং যারা সাহিত্যে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করত, তাদের ‘কাবিল’ উপাধি প্রদান করা হত। এ ছাড়া কৃতী ছাত্রদের সনদ (Certificate), ইনাম (Prize) এবং তনখা (Medals) প্রভৃতি দক্ষতা অর্জনের পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হত।

বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা

মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থায় তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যাবহারিক শিক্ষারও ব্যবস্থা ছিল। এসময় সংগীত, নৃত্য, অঙ্কন, স্থাপত্যবিদ্যা প্রভৃতির প্রসার ঘটে। ইলতুৎমিস, আলাউদ্দিন খলজি প্রমুখ শাসকগণ তাঁদের শাসনকালে বৃত্তিশিক্ষার প্রসার ঘটান।

(1) সাধারণ বৃত্তি: কৃষি, শিক্ষা, ব্যাবসাবাণিজ্য ইত্যাদি সাধারণ বৃত্তির গুরুত্ব না থাকলেও, তা প্রচলিত ছিল।

(2) শিল্পাকন্দ্রিক বৃত্তি: ইসলামীয় শিক্ষাব্যবস্থায় শিল্পকে কেন্দ্র করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। অনেকসময় মানুষ পারিবারিক বৃত্তিকে অনুসরণ করত। 

(3) নির্মাণ শিল্প: মধ্যযুগে পারস্য ও তুর্কি দেশ থেকে আগত নৃপতিদের সান্নিধ্যে ভারতবর্ষের মিস্ত্রিদের নির্মাণকার্যেও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। ফলে নতুন নতুন স্থানে প্রাসাদ, সৌধ ও মসজিদ, দুর্গ তৈরি হতে দেখা যায়।

(4) সামরিক বৃত্তি : শিক্ষার্থীদের সামরিক শিক্ষা দেওয়া হত। কারণ হিন্দু রাজাদের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য সামরিক শিক্ষা ছিল প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে আবশ্যিক।

(5) চিকিৎসা ও কারিগরিবিদ্যা: ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে চিকিৎসাবিদ্যা ও কারিগরিবিদ্যার উন্নতি হয়।

(6) বয়ন শিল্প ও স্বর্ণ শিল্প: আকবরের সময়ে বয়ন শিল্পের জন্য বড়ো কারখানা নির্মাণ করা হয়েছিল। যেখানে রেশম ও সুতোর সাহায্যে সুন্দর নকশা করা কাপড় তৈরি হত আবার কোথাও স্বর্ণকারেরা সুন্দর অলংকার প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত থাকত।

আরও পড়ুন – বিকাশের স্তরসমূহ প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment