বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান পদ্ধতি কেমন ছিল

বাস্তববাদী বেগম রোকেয়ার শিক্ষা ভাবনায় শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল বাস্তবসম্মত। তাঁর শিক্ষা ভাবনাকে রূপদান করার জন্য শিক্ষাদান পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাস্তববাদী ও প্রয়োগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিলেন। সাধারণত তিনি প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি ব্যবহার করেন তবে তিনি থাকাকালীন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বলেন যে, “যদি তোমরা না বুঝিয়া থাক, আমাকে জিজ্ঞাসা কর, আমি বুঝিয়া বলবো।” তার এই বক্তব্য থেকে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা সম্পর্কে জানা যায়। তাঁর মতে শিক্ষা প্রক্রিয়ায় শিক্ষক কেবল দাতা হবেনা ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা শুধুমাত্র গ্রহীতা হবে না। শিক্ষা প্রক্রিয়ার কাজ প্রশ্ন ও উত্তরের আদান-প্রদানের মাধ্যমে অগ্রসর হবে। তিনি আরো বলেছেন, শিক্ষা কেবল পর্যবেক্ষণ নয়। শিক্ষা হবে অনুসন্ধান, শ্রেণিকরণ ও পরীক্ষণের উপর গুরুত্ব দিয়ে। যেমন- ভূগোল পাঠের সময় অনুসন্ধান পদ্ধতি প্রয়োগ করার কথা বলেছেন। এর থেকে শিক্ষার্থীর মধ্যে সুশৃঙ্খলতা ও বোধগম্যতা তৈরি হবে। বিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। এর থেকে শিক্ষার্থীরা মূল সূত্রগুলি শিখে নেবে। তা ছাড়া চার দেওয়ালের বাইরে প্রকৃতির মাঝখানে ভ্রমণ করে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং শুধু জ্ঞান বিজ্ঞান, ধর্ম শিক্ষাকে আবশ্যিক করার কথা বলেছেন। তার মতে, ঈশ্বরের সৃষ্টি যত বেশি দেখা যায় ততই তার প্রতি ভক্তি বাড়ে। সৃষ্টি জগতের মাধ্যমে স্রষ্টাকে চিনতে হলে কোরানের অর্থ বলা ও তা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি নামাজে ব্যবহৃত দোয়া কালামের অর্থ বুঝিয়ে শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁর শিক্ষণ পদ্ধতি ছিল বিজ্ঞানসম্মত। তাঁর শিক্ষণ পদ্ধতির অভিনবত্ব অভিভাবকদের আকৃষ্ট করেছিল। ফলে বিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর