বেগম রোকেয়া নারী জাগরণের অগ্রদূত’- উক্তিটি ব্যাখ্যা কিরো
অথবা, নারীশিক্ষা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ার ভূমিকা লেখো

বাংলার নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ার অসামান্য অবদান শিক্ষার ইতিহাসে বিশেষ স্থান দিয়েছে। তিনি পুরুষের পাশাপাশি নারীরও সার্বিক বিকাশের কথা বলেছেন। সমাজের সঠিক কল্যাণ অর্জনের জন্য শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে নারী সমাজের উন্নতি করেছেন।
ইংরেজ ঔপনিবেশিক আমলে মুসলিম নারীসমাজে নবজাগরণ এনেছিলেন বেগম রোকেয়া। মুসলিম নারী সমাজ স্বাবলম্বী হোক, শিক্ষা-দীক্ষায় পুরুষের মতোই যোগ্যতা অর্জন করুক, সামাজিক কর্মকাণ্ডে পুরুষের ন্যায় নারী সমান যোগ্যতা অর্জন করুক এটাই ছিল তার আন্তরিক কামনা। এজন্য তাঁর জীবনে কর্মকাণ্ডের বিরাট অংশ ছিল নারী সমাজের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা এবং বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। 1909 সালে রোকেয়ার স্বামীর নামে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়, যাতে গরিব, অবহেলিত, নিপীড়িত মহিলার পড়াশোনা করতে পারে। আবার সমাজ ও রাষ্ট্রে যথাযথ ভূমিকা গ্রহণের জন্য মুসলিম মহিলা সমিতি গঠন করেন। সেই সময় মুসলিম মেয়েরা সহজে বিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আসত না। তার কারণ সমাজ ছিল রক্ষণশীল। বাড়ির অভিভাবকরা মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাত না। বেগম রোকেয়া ঘরে ঘরে গিয়ে নারীশিক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়েছেন এবং মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছেন। বাংলার গৃহবন্দি মুসলিম নারী সমাজকে গৃহের অন্ধকার কোণ থেকে বাইরের আলোকে বের করে এবং সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রোকেয়ার ভূমিকা অনস্বীকার্য। বেগম রোকেয়া দৃঢ় মনোবলের অধিকারী ছিলেন বলেই, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আধুনিক শিক্ষার প্রচার করে গেছেন। এই কারণে বেগম রোকেয়াকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর