খের কমিটির রিপোের্ট দুটিতে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, তা ‘আলোচনা করো

খের কমিটির রিপোের্ট দুটিতে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, তা ‘আলোচনা করো

খের কমিটির রিপোের্ট দুটিতে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, তা 'আলোচনা করো
খের কমিটির রিপোের্ট দুটিতে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, তা ‘আলোচনা করো

কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সমিতি (CABE), উড অ্যাবট রিপোর্ট ও জাকির হোসেন কমিটির রিপোর্টগুলি পর্যালোচনা করার জন্য বি জি – খেরের সভাপতিত্বে দুটি কমিটি গঠিত হয়। যা খের কমিটি নামে পরিচিত।

প্রথম রিপোর্টের সুপারিশসমূহ

1938 সালে খের কমিটি তাদের প্রথম রিপোর্ট পেশ করে। এই রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়-

(1) বুনিয়াদি শিক্ষার পরিকল্পনা সর্বপ্রথম গ্রামাঞ্চলে কার্যকরী করা হবে।

(2) বুনিয়াদি শিক্ষার বয়সকাল 6-14 বছর বয়স পর্যন্ত হলেও 5 বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের ভরতি করা যাবে।

(3) শিখন কৌশল হবে কর্মকেন্দ্রিক, অর্থাৎ নিম্নশ্রেণির কাজ হবে বৈচিত্র্যবহুল। পরবর্তী স্তরে উত্তীর্ণ হওয়া মাত্রই শিল্প শিক্ষাব্যবস্থারও উন্নতি হবে। এইসকল শিল্পদ্রব্যের বিক্রির পর যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা স্কুলের ব্যয় নির্বাহের জন্য খরচ করা হবে। 

(4) পঞ্চম শ্রেণির পর শিক্ষার্থীরা বুনিয়াদি শিক্ষা থেকে অন্য শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে।

(5) বুনিয়াদি শিক্ষায় কোনো বহিঃপরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে না।

(6) শিক্ষার মাধ্যম হবে মাতৃভাষা।

(7) শিক্ষার শেষে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে স্কুল ত্যাগের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

(8) মূল শিল্পের সঙ্গে অনুবন্ধ প্রণালীতে যেসব সংস্কৃতিমূলক বিষয় শেখানো সম্ভব নয়, সেগুলিকে ভিন্নভাবে শেখানো হবে। 

(9) পঞ্চম শ্রেণির পাঠ শেষ করার পর কোনো শিক্ষার্থী যদি অন্য কোনো শিক্ষাগ্রহণ করতে চায়, তবে তাকে স্কুল বদলির সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।

(10) উপযুক্ত ব্যক্তি ও মেয়েদের শিক্ষকতা গ্রহণে উৎসাহ দেওয়া হবে।

(11) শিক্ষক-শিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষকদের শিক্ষার মান উন্নত করা হবে।

(12) কোনো শিক্ষকের বেতন কুড়ি টাকার কম হবে না।

দ্বিতীয় রিপোর্টের সুপারিশসমূহ

খের কমিটির দ্বিতীয় রিপোর্টটি 1940 সালে প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টে যেসকল বিষয়ে সুপারিশ করা হয়, সেগুলি হল-

(1) বুনিয়াদি শিক্ষার সময়কাল হবে ৪ বছর অর্থাৎ 6-14 বছর বয়স পর্যন্ত।

(2) 6-14 বছর সময়কালকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। নিম্নবুনিয়াদি শিক্ষা এবং উচ্চবুনিয়াদি শিক্ষা।

(3) এই রিপোর্টে বলা হয় যে, শিক্ষার্থীরা নিম্ন বুনিয়াদি স্তরের শিক্ষা শেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এই পর্যায়ে শিক্ষার মধ্যে বৈচিত্র্য থাকবে, যাতে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীকালে কোনো উচ্চতর বাণিজ্য ও শিল্পক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।

(4) এই রিপোর্টে আরও বলা হয় যে, মেয়েদের শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহকে পাঠক্রমে স্থান দিতে হবে। শিক্ষা উপদেষ্টা সমিতি খের কমিটির অধিকাংশ সুপারিশ গ্রহণ করে। এর পরবর্তী সময়ে সার্জেন্ট কমিটির রিপোর্টেও খের কমিটির অধিকাংশ সুপারিশ গৃহীত হয়।

আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment