লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতি বলতে কী বোঝো? লর্ড কার্জনের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত নীতিগুলি লেখো

লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতি
ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সংস্কারসাধনের উদ্দেশ্যে লর্ড কার্জন 1902 সালের 27 জানুয়ারি স্যার টমাস র্যালের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করেন যা ‘ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন’ নামে পরিচিত হয়। ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে লর্ড কার্জন 1904 সালের 11 মার্চ যে শিক্ষানীতি প্রকাশ করেন, সেটি লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতি বা Government of India’s Resolution of Education Policy, 1904 নামে পরিচিত।
লর্ড কার্জনের প্রাথমিক শিক্ষানীতি
(1) ব্যয়ভার বহন: প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতিকল্পে ও শিক্ষার প্রসারের জন্য সরকারকে অংশ ব্যয়ভার বহনের কথা বলা হয়। এ ছাড়া আরও বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষার ভার ন্যস্ত করা হবে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের উপর।
(2) সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরোপ: প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তারের জন্য যেসকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা সংক্রান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করবে, তা কার্যকরী করার আগে তাদের নিজ এলাকার শিক্ষা অধিকর্তা বা DPI-এর অনুমোদন নিতে হবে।
(3) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে অনুদান প্রথা বর্জনের নীতি: ইতিপূর্বে বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের সরকারি অনুদান দেওয়া হবে কি না, তা বিবেচনা করা হত। কিন্তু লর্ড কার্জনের শিক্ষা সংক্রান্ত নীতি অনুযায়ী এই পদ্ধতি বর্জনের কথা বলা হয়।
(4) পাঠক্রদ রচনা: কার্জনের শিক্ষানীতিতে গ্রামীণ স্কুলের জন্য উপযোগী পাঠক্রম প্রণয়নের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়। পাঠক্রমের মধ্যে প্রকৃতিপাঠ, কৃষি শিক্ষা, শারীরশিক্ষা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
(5) শিক্ষার মাধ্যন: এই নীতিতে মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাপ্রদানের কথা বলা হয়।
(6) শিক্ষক-শিক্ষণ সংক্রান্ত ব্যবস্থা: লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয় এবং শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।
(7) সংখ্যাগত ও গুণগত মানোন্নয়ন : সরকারি শিক্ষা সংক্রান্ত এই দলিলে প্রাথমিক শিক্ষার সংখ্যাগত ও গুণগত মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর