মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যাসমাধানের উপায়গুলি লেখো

মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যাসমাধানের উপায়গুলি লেখো

মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যাসমাধানের উপায়

মাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যাসমাধানের জন্য নিম্নলিখিতগুলির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। যেমন-

(1) পরিকাঠামোগত উন্নয়ন: পরিকাঠামোগত সমস্যা দূরীকরণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরির উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার, শিক্ষাসহায়ক উপকরণ প্রয়োজন।

(2) শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব দূরীকরণ: প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব পূরণ করা দরকার।

(3) বাস্তবসম্মত পাঠক্রম : পাঠ্যক্রমে তাত্ত্বিক দিকের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাবহারিক দিকের উপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। পাঠক্রম সমাজের চাহিদাভিত্তিক, জীবনকেন্দ্রিক, বাস্তবসম্মত হওয়া প্রয়োজন।

(4) মানাবিজ্ঞানসম্মত শিক্ষণ পদ্ধতি: শিক্ষণ পদ্ধতি মনোবিজ্ঞানসম্মত ও বিজ্ঞানসম্মত করা দরকার। শিক্ষণকালে প্রয়োজনে শিক্ষাসহায়ক উপকরণ ব্যবহার করা দরকার।

(5) অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা: মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে অধিক পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

(6) সহপাঠক্রমিক কাজ : সময়তালিকাতে সহপাঠক্রমিক কাজের ব্যবস্থা থাকলেও যথাযথ সহপাঠক্রমিক কাজের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে।

(7) নিয়মিত পরিদর্শন ও ভত্ত্বাবধান: পঠনপাঠন, প্রশাসনিক ব্যবস্থা সঠিক রাখার জন্য পরিদর্শন ও তত্ত্বাবধান ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব প্রদান করা উচিত।

(৪) স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা: বিদ্যালয়গুলিতে বছরে এক বা দুবার স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় বা এমন অনেক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে এই ব্যবস্থা নেই। প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।

(9) মূল্যায়ন ব্যবস্থার পরিবর্তন : মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে পরিবর্তন এলেও মূল্যায়ন যথাযথ হচ্ছে না কারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হল ম্যানেজের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যথাযথ মূল্যায়ন না হলে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি সম্বন্ধে যথাযথ তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। এই কারণে মূল্যায়ন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অমূলক পরিবর্তন ঘটানো দরকার।

(10) সংশোধনমূলক শিক্ষণের ব্যবস্থা: তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য সংশোধনীমূলক শিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

(11) ব্যাবহারিক মূল্যায়ন: ব্যাবহারিক পরীক্ষা বলতে কিছু প্রোজেক্ট রয়েছে, তবে সেই প্রোজেক্টের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। বিজ্ঞান, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়গুলির ব্যাবহারিক দিকের মূল্যায়ন হওয়া দরকার। তাই ব্যাবহারিক মূল্যায়ন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।

(12) বৃত্তিমুখীকরণ: মাধ্যমিক শিক্ষাকে প্রকৃত অর্থে বৃত্তিমুখী ও উৎপাদনমুখী করে তোলা হয়নি। এ ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে।

(13) গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা: বিদ্যালয়গুলিতে উপযুক্ত গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা করতে হবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য বইয়েরও ব্যবহার করতে পারবে যা তাদের জ্ঞানের চাহিদাকে পরিতৃপ্ত করতে পারবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে পরীক্ষাগারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

(14) উদ্দ্যেশ্যর পুনর্গঠন : মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলিকে বাস্তবের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।

(15) অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক: মাধ্যমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন। সুতরাং মাধ্যমিক শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষক, প্রশাসক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী প্রত্যেককেই তাদের দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুন – আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment