মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে আলোচনা করো
মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম
(1) মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন বা মুদালিয়র কমিশানর (1952-53 সাল) মত : মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে, তা হল-ভাষা, সাধারণ বিজ্ঞান, সমাজবিদ্যা, গণিত, কলা ও সংগীত, হাতের কাজ বা হস্তশিল্প, শারীরবিদ্যা।
(2) কোঠারি কমিশনের মত: কোঠারি কমিশনের মতে, মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে মোট 5টি বিভাগ আছে। যেমন- ভাষা, বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, কর্ম-অভিজ্ঞতা ও অতিরিক্ত বিষয়।
(3) পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষার যে পাঠক্রম রয়েছে, তা কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমটি নীচে আলোচনা করা হল।
- ভাষা বিভাগ: ভাষা বিভাগে প্রথম ভাষা হিসেবে মাতৃভাষা এবং দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
- বিজ্ঞান বিভাগ: বিজ্ঞান বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হল-
- প্রকৃতিবিজ্ঞান (রসায়নবিদ্যা ও পদার্থবিদ্যা)
- জীবনবিজ্ঞান (জীববিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা)
- গণিত (পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, পরিমিতি)
- সমাজবিজ্ঞান বিভাগ: সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হল- ইতিহাস এবং ভূগোল।
- কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিভাগ: এই বিভাগের মধ্যে আছে উৎপাদনমূলক কাজ, কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা এবং সমাজসেবা। এইসমস্ত কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা লাভ করে।
ঐচ্ছিক বিষয়ের বিভাগ: পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ নির্ধারিত যে-কোনো একটি ঐচ্ছিক বিষয় শিক্ষার্থী তার পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচন করতে পারে। বর্তমানে এটি পাঠক্রমের আবশ্যিক অংশ নয়। পূর্বে নবম ও দশম শ্রেণির দুই বছরের বিষয়সমূহ নিয়ে শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিত। বর্তমানে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির বিষয়সমূহ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষা দিতে হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে এই পাঠক্রমটি চালু আছে। এই পাঠক্রমটি সম্পূর্ণ হলে একটি বহিঃপরীক্ষা বা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরীক্ষাটি হয় ৪০০ নম্বরের। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন – আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর