মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব লেখো

মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব লেখো

মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব

শিক্ষাগত দিক থেকে কৈশোরকাল হল মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর। প্রাথমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার স্তর মাধ্যমিক শিক্ষা নামে পরিচিত। নীচে মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করা হল।

(1) শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ: শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ। সাহিত্য, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি জ্ঞানমূলক বিষয় এবং বিভিন্ন কর্ম-অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশসাধনের চেষ্টা করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি।

(2) দায়িত্বশীল নাগরিক গঠন: শিক্ষার্থীকে উপযুক্ত শিক্ষাদানের মাধ্যমে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল আদর্শ নাগরিকরূপে গড়ে তোলা এই শিক্ষার বিশেষ উদ্দেশ্য।

(3) জাতীয়তাবোধ গঠন: শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তরে পৌঁছোলে তার মধ্যে দেশের প্রতি, জাতির প্রতি, সমাজের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়, তাই মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমে এমন সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে দেশ ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হয়।

(4) নেতৃত্বদানের ক্ষমতার বিকাশ : সুদক্ষ নেতা ছাড়া রাষ্ট্র পরিচালনা অসম্ভব। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য নেতৃত্বদানের উপযোগী সুদক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।

(5) বৃত্তিমুখী করা: শিক্ষার্থীর সামর্থ্য ও চাহিদা অনুযায়ী বৃত্তিমুখী শিক্ষাদান করা মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। শিক্ষার্থীরা যাতে ভবিষ্যৎ জীবনে উপযুক্ত বৃত্তি নির্বাচন করতে পারে, সেদিকে লক্ষ রেখে মাধ্যমিক শিক্ষান্তরে কর্ম-অভিজ্ঞতা দানের চেষ্টা চালায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি।

(6) সুস্বাস্থ্যাভ্যাস গঠন : মাধ্যমিক শিক্ষা এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ যে এই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দৈহিক ও মানসিক উভয় দিক থেকে সু-অভ্যাস গঠনের চেষ্টা করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি।

(7) সাংস্কৃতিক বিকাশ: মাধ্যমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মনোভাবের বিকাশসাধন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবোধ গড়ে ওঠে।

(৪) সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ: মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের সৃজনাত্মক ক্ষমতা ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশসাধন। বিভিন্ন সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং হাতেকলমে বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা এবং সৌন্দর্যবোধ বিকাশলাভ করে।

(9) নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ: নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। মাধ্যমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন কতগুলি চারিত্রিক গুণের বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন, যাতে তার মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চেতনা জাগ্রত হয়।

(10) বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ: আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। তাই শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র নৈতিক, আধ্যাত্মিক বা সামাজিক শিক্ষাদান করলে চলবে না, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার বিকাশ ঘটাতে হবে। কারণ বিজ্ঞান মানুষকে কুসংস্কারমুক্ত করে এবং যুক্তিতর্কের গুণাবলির বিকাশ ঘটিয়ে উন্নত চরিত্রের অধিকারী করে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি শিক্ষার্থীদের এই গুণাবলির বিকাশ ঘটাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন – আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment