ধর্মশিক্ষা বিষয়ে হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি লেখো। হান্টার কমিশনের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কিত সুপারিশের মূল্যায়ন করো

ধর্মশিক্ষা সম্পর্কিত হান্টার কমিশনের সুপারিশসমূহ
(1) হান্টার কমিশনে শিক্ষার্থীদের নৈতিক চরিত্রগঠনে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে নীতিশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিশেষ করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও তা অত্যন্ত আবশ্যিক বলে উল্লেখ করা হয়।
(2) সকল ধর্মের মূলনীতি অনুযায়ী পাঠ্যপুস্তক রচনা সম্পর্কেও সুপারিশ প্রদান করা হয়।
(3) শিক্ষার্থীদের নীতিগত শিক্ষাদানের পাশাপাশি ধর্মপরায়ণ হিসেবে গড়ে তোলা, একজন যথার্থ নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্যপালন সম্পর্কে শিক্ষাদানের জন্য অধ্যাপক নিয়োগের কথা হান্টার কমিশনে বলা হয়।
হান্টার কমিশনের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কিত সুপারিশের মূল্যায়ন
(1) গুরুত্ব বা অবদান :
(1) হান্টার কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে ক্রমশ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার ও বেসরকারি প্রচেষ্টাকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রসারের নীতি অনুসরণ করেছিল যা ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
(2) প্রতিটি জেলায় মডেল হিসেবে সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, মাতৃভাষা এবং ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের কথা বলা হয়।
(3) মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে ‘A’ কোর্স ও ‘B’ কোর্স প্রবর্তনের কথা বলা হয়, যা পরবর্তীকালে পুঁথিগত শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তিমুখী শিক্ষার সুযোগও বৃদ্ধি করে।
(2) মাধ্যমিক শিক্ষার মূল্যায়ন :
(1) হান্টার কমিশনের সুপারিশে মাধ্যমিক শিক্ষার নীতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলা হলেও কীভাবে সেই সুপারিশ কার্যকর হবে সে সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলা হয়নি।
(2) ‘B’ কোর্সের ব্যাবহারিক শিক্ষার আয়োজন করলেও কমিশন যন্ত্রশিক্ষার উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তার উপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করেনি। তার ফলে ‘B’ কোর্স জনপ্রিয় হয়নি।
(3) মাধ্যমিক শিক্ষায় ইংরেজির প্রাধান্য থাকায় মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রসারের পথ রুদ্ধ হয়।
উপরোক্ত আলোচনার শেষে এটুকু বলা যায় যে, মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে – দ্বিমুখী শিক্ষার সুপারিশটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তীকালে মুদালিয়র কমিশনে তার প্রতিফলন ঘটে। শিক্ষার উপর থেকে সরকারি হস্তক্ষেপ হ্রাস সম্পর্কিত সুপারিশ শিক্ষাক্ষেত্রে শুভ সূচনার ইঙ্গিত বহন করে। সেই দিক থেকে হান্টার কমিশন প্রশংসার দাবি রাখে।
আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর