কীভাবে জাপানে শিন্টো ধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের সহাবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হয়েছিল? ব্র‍্যান্ড ও পরকাল সম্পর্কে শিন্টো ধারণা কী ছিল

কীভাবে জাপানে শিন্টো ধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের সহাবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হয়েছিল? ব্র‍্যান্ড ও পরকাল সম্পর্কে শিন্টো ধারণা কী ছিল

কীভাবে জাপানে শিন্টো ধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের সহাবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হয়েছিল? ব্র‍্যান্ড ও পরকাল সম্পর্কে শিন্টো ধারণা কী ছিল
কীভাবে জাপানে শিন্টো ধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের সহাবস্থান বজায় রাখা সম্ভব হয়েছিল? ব্র‍্যান্ড ও পরকাল সম্পর্কে শিন্টো ধারণা কী ছিল

জাপানে শিন্টো ধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের সহাবস্থান 

আনুমানিক খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে জাপানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রবেশ করে এবং প্রভাবশালী অভিজাত সোগা (Soga) পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই নব প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ ধর্ম জাপানিদের ধর্মীয় চিত্রকলা এবং অলংকার সমৃদ্ধ মন্দির স্থাপত্যের সঙ্গে পরিচয় ঘটায়। সেসময় জাপানে যদিও শিন্টো ধর্ম প্রচলিত ছিল, তবে বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে প্রচলিত শিন্টোবাদের আপাতভাবে কোনও সংঘাত ছিল না। একজন আদি শিন্টোবাদী সমান্তরালভাবে বৌদ্ধ ধর্মের অনুরাগী হতে পারতেন। ক্রমে চিন ও কোরিয়ার দৃষ্টান্তে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাপানিরা দলে দলে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে জাপানি রাজপুত্র শোটোকু (Shotoku) স্বয়ং বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন এবং বৌদ্ধ ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্মের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে শিন্টো ধর্মের গুরুত্ব হ্রাস পায়। অবশ্য বৌদ্ধ ধর্মের সমান্তরালে অন্তঃসলিলা স্রোতের মতোই শিন্টোবাদ জাপানের জনমনে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর এইভাবেই উভয় ধর্ম পারস্পরিক সহাবস্থান বজায় রেখেছিল।

ব্রহ্মাণ্ড ও পরকাল সম্পর্কে শিন্টো ধারণা

(1) বন্ধুান্ড: শিন্টো ধর্মের ব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কিত ধারণা মূলত কামিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। কোজিকি (Kojiki) ও নিহন শকি (Nihon Shoki) নামক প্রাচীন গ্রন্থে ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি ও কামিদের ভূমিকা বর্ণনা করা হয়েছে। শিন্টোবাদে সৃষ্টির ধারণাটি মুসুবি (Musubi) নামে পরিচিত। শিন্টো ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তিনটি স্তরে বিভক্ত। যথা- উচ্চ স্বর্গীয় ভূমি (তাকামা নোহারা, Takamanohara), মধ্যভূমি বা পার্থিব জগৎ (নাকাতসুকুনি, Ashihara no Nakatsukuni) এবং নিম্নস্তর বা নরক (হেয়োমি নো কুনি, Yomi nokuni) 

(2) পরকাল: শিন্টো ধর্মে পরকাল সম্পর্কে খুব নির্দিষ্ট কোনও ধারণা পাওয়া যায় না। তবে এ প্রসঙ্গে বেশকিছু মৌলিক বিশ্বাস বিদ্যমান। যথা-

  • শিন্টো ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে, মৃত্যুর পর আত্মারা হেয়োমি নো কুনি-তে চলে যায়।
  •  শিন্টোরা মনে করেন যে, মৃত্যুর পর আত্মারা পূর্বপুরুষদের আত্মায় পরিণত হন এবং তাঁরা পরিবারের রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের সদস্যরা তাই পূর্বপুরুষদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে নিয়মিত প্রার্থনা ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
  • শিন্টো ধর্মে মৃত্যুকে দেখা হয় অপবিত্র হিসেবে। বস্তুত, শিন্টো ধর্ম ও দর্শনে ব্রহ্মাণ্ড ও পরকালের ধারণাগুলি মূলত প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্বন্ধ, পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং জীবনচক্রের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment