উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো

উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো

উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো
উড-এর ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্য লেখো

উডের ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্য

উডের ডেসপ্যাচের গুরুত্ব বা তাৎপর্যগুলি হল-

(1) সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ: উডের প্রতিবেদনে সর্বস্তরের শিক্ষার প্রতি গভীর দৃষ্টিনিক্ষেপ করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন অর্থাৎ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিটি স্তর সম্পর্কেই ডেসপ্যাচে সক্রিয় উদ্যোগ গৃহীত হয়েছিল।

(2) জনগণের হতাশা হ্রাস: উডের ডেসপ্যাচে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইরেজির পাশাপাশি মাতৃভাষাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর ফলে সর্বস্তরে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয় ও জনগণের হতাশা হ্রাসপ্রাপ্ত হয়।

(3) দেশবাসীর মঙ্গলসাধন: প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি আর্থিক অনুদান দেওয়া পর্যন্ত ব্যবস্থা করা হয়। ফলে দেশবাসীর মঙ্গলসাধন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ আংশিক হলেও সম্ভবপর হয়।

(4) জনশিক্ষার প্রসার: উডের ডেসপ্যাচে জনশিক্ষা বিস্তারের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করা হয়েছিল। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চুঁইয়ে পড়া নীতি অথবা কেবলমাত্র বেসরকারি প্রচেষ্টায় ভারতবর্ষের মতন বিশাল দেশের জনশিক্ষা বিস্তারের কর্মসূচি সফল হতে পারে না। এর জন্য প্রতিবেদনে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগী হওয়ার কথা বলা হয়। এর জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যালয় স্থাপন ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য বৃত্তিদানের ব্যবস্থা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এইভাবে দেখা যায়, শিক্ষার সামাজিকীকরণ ও গণবিস্তারের কাজে উডের দলিল যে শুধুমাত্র নির্দেশ দান করে তাই-ই নয়, কার্যগত শ্রেণিবিন্যাস-এর মাধ্যমে শিক্ষাকে বাস্তব ও কর্মমুখী করার চেষ্টাও এর দ্বারা করা হয়।

(5) সুসংহত ও সুবিন্যস্ত: উডের ডেসপ্যাচেই সর্বপ্রথম ইংরেজ সরকারের সুবিন্যস্ত শিক্ষানীতি ঘোষিত হয়েছিল।

(6) বৃত্তিশিক্ষায় গুরুত্বদান : উডের প্রতিবেদনে শিক্ষাকে কেবলমাত্র সাহিত্য ও দর্শনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বৃত্তিশিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করার কথা বলা হয়েছে।

(7) স্ত্রীশিক্ষার বিস্তার: স্ত্রীশিক্ষার জন্য এসময় আগ্রা, মথুরা, উত্তরপ্রদেশ ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা পরিদর্শকদের প্রচেষ্টায় বেশ কয়েকটি নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল।

(8) ধর্মনিরপেক্ষ নীতি: ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার নীতি গৃহীত হয়েছিল, যার প্রভাব আজও অক্ষুণ্ণ আছে।

(9) উচ্চশিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ: উডের ডেসপ্যাচ অনুযায়ী, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডেন্সি শহর, যথা- কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। এর ফলে ভারতীয়দের উচ্চশিক্ষার পথ প্রশস্ত হয়।

আরও পড়ুন – মধ্যযুগীয় ভারতের শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment