আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Second Semester

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর | Class 11 Second Semester

আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর
আজব শহর কলকেতা প্রশ্ন উত্তর
১। ‘আজব শহর কলকাতা’ কী জাতীয় রচনা? কার লেখা?

‘আজব শহর কলকাতা’ রম্যরচনা।

সূচিপত্র

এই রম্যরচনাটির রচয়িতা হলেন বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়

প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী।

২। ‘আজব শহর কলকেতা ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি’-বক্তা কে? কার ছেলেবেলার কথা বলা হয়েছে?

আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন লেখক নিজে অর্থাৎ সৈয়দ মুজতবা আলী।

সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর শৈশব থেকে শুনে এসেছেন বাড়ির বড়োদের কাছ থেকে যে কলকাতা আজব শহর।

৩। ‘সমীরণে পথ হারানোর বেদনা বেজে উঠল’-কেন?

লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী রাস্তায় অবস্থানকালে হঠাৎ বৃষ্টি নামে। তখন তাঁর কাছে কোনো ছাতা, বর্ষাতি ছিল না; ছিল না পর্যাপ্ত টাকা যা নিয়ে বসে বা ট্যাক্সিতে বাড়ি ফেরা যায়। বাড়ি ফেরার চিন্তাকে বাতাসের পথ হারানোর তুলনা দিয়েছেন।

৪। ‘সামনে দেখি বড় বড় হরফে লেখা…’-কে, কী লেখা দেখতে পেয়েছিলেন?

আলোচ্য উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ থেকে নেওয়া হয়েছে; যেখানে বক্তা হলেন লেখক নিজে। তাঁর চোখের সামনে বইয়ের দোকান দেখতে পেলেন যেটা একটা ফরাসি বইয়ের।

৫। ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ দেখার পর লেখকের কী মনে হয়েছিল?

✔ ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ দেখার পর লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর মনে হয়েছিল কোনো ফরাসি ব্যক্তি পথ হারিয়ে কলকাতায় এসে পড়েছেন এবং যেটুকু আর্থিক সম্বল তার আছে তা হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার জন্য কলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকান খুলে বসেছেন।

৬। ‘বাঙালি প্রকাশকরা বলেন,’-বাঙালি প্রকাশকরা কী বলেন?

‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখক বাঙালি প্রকাশকদের কথা উল্লেখ করেছেন। বাঙালি প্রকাশকদের মতে শুধু ভালো বই ছাপালেই হবে না, রদ্দি অর্থাৎ ভালো নয় সেই ধরনের উপন্যাস বা লেখাও ছাপাতে হয়।

৭। ‘কথাটা যদি সত্যি হয়’-কার, কোন্ কথার কথা লেখক বলেছেন?

‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে কলকাতার প্রকাশকরা আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। কলকাতার প্রকাশকরা মনে করেন শুধু ভালো বই ছাপালেই হয় না, ভালো বইয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজে রদ্দি উপন্যাস বা লেখাও ছাপাতে হয়, ব্যাবসার প্রয়োজনে।

৮। ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-কে লেখক কার সঙ্গে কেন তুলনা করেছেন?

‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-কে লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী হাতির দাঁতের সাথে তুলনা করেছেন।

হাতির সামনের বড়ো দাঁত দেখানোর জন্য, সেই দাঁত দিয়ে হাতি খাবার খায় না। এই দাঁত শুধু দেখানোর দাঁত। কলকাতায় হাঁটতে হাঁটতে লেখক হঠাৎ ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ দেখতে পেলেন। লেখক ভাবলেন কলকাতা শহরে ফরাসি বই কেনার মতো মানুষ নেই। তাই হাতির দাঁতের মতো এই ফরাসি বইয়ের দোকান, সামনে ফরাসি বই হলেও ভেতরে হয়তো অন্য কোনো ধরনের বই বিক্রি করা হয়।

৯। ‘সেই ভরসায় ঢুকলুম’-লেখক কোথায়, কেন ঢুকলেন?

‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখক ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে অবাক হয়েছিলেন। কলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকান কখনও চলতে পারে না। নিশ্চয়ই হাতির দাঁতের মতো সবার সামনে ফরাসি বই বিক্রি করলেও ভেতরে ‘খুশবাই’, ‘সাঁঝের পীর’, ‘লোরেণু’, ‘ওষ্ঠ-রাগ’ প্রভৃতি কিছু নীচু মানের মনোরঞ্জনকারী বই বিক্রি হয়। লেখক তাঁর দৃঢ় সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করবার আশায় এই ফরাসি দোকানে ঢুকেছিলেন।

১০। ফরাসি দোকানদার তার দোকানের বইগুলি কাদের মতো, কেমন করে সাজিয়েছেন?

‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক জানিয়েছেন যে কলকাতায় এসে ফরাসি দোকানদার কলকাতার মানুষ অর্থাৎ বাঙালি হয়ে গেছেন। তাই তিনি বাঙালি দোকানদারদের মতো টাইপরাইটারের হরফে দোকানের বইগুলোকে সাজিয়েছেন। যিনি বা যাঁরা এই সিজিলটা জানে তারা সহজেই সেখান থেকে বই বের করতে পারবে আর যে জানে না সে কখনোই বই বার করতে পারবে না।

১১। ‘সে চোখ বন্ধ করেই ইচ্ছেমত বই বের করতে পারবে,’-কোথা থেকে, কী জানা থাকলে লেখকের মতে ইচ্ছেমতো বই বের করা যেতে পারে?

‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখক পথচলতি একটি ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পান। হঠাৎ প্রচণ্ড বৃষ্টি আসায় লেখক এই বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন। দোকানে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান ফরাসি দোকানের দোকানদার কলকাতায় এসে বাঙালি দোকানদারের মতো দোকান সাজিয়েছেন। অর্থাৎ টাইপরাইটারের হরফে দোকানের বই সাজানো। যে এই সিজিলটা জানবে সে খুব সহজেই বই বার করতে পারবে, বইয়ের তাক থেকে।

১২। ‘তার কোমর ভেঙে তিন টুকরো হয়ে যাবে’- কার, কেন কোমর ভেঙে তিন টুকরো হবে?

‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক পথচলতি কলকাতায় এক ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে তিনি অবাক হয়েছিলেন। হঠাৎ বৃষ্টি আসায় তিনি সেই ফরাসি বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন। দোকানে দেখেন দোকানদার ফরাসি হলেও বাঙালি দোকানদারের মতো টাইপরাইটার-এর হরফে বই সাজিয়ে রেখেছেন। ফলে যিনি এই সিজিলটা জানবে না তিনি বইয়ের দোকান থেকে বই বার করে আনতে তার কোমর ভেঙে যাবে। এই সিজিলটা জানা না-থাকলে বই বার করা একেবারে অসম্ভব।

১৩। ‘আপনার আনন্দ কিসে?’-বক্তা কে? কাকে বলেছে?

‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এর মহিলা দোকানদার।

বৃষ্টির থেকে বাঁচার জন্য আশ্রয়ের তাগিদে লেখক এই ফরাসি বইয়ের দোকানে ঢুকেছিলেন। লেখককে এই কথাটা বলেছিলেন দোকানে উপস্থিত মহিলা দোকানদার।

১৪। ‘গোটা ভাষাটার কথা বাদ দিন’-বক্তা কে? কোন ভাষার কথা বলা হয়েছে?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন স্বয়ং লেখক। ফরাসি দোকানে প্রবেশ করবার পর দোকানদার ফরাসি ভাষায় লেখকের সঙ্গে কথা বললে লেখক সমস্যায় পড়েন। কারণ লেখক ফরাসি ভাষা ভালো করে বলতে পারেন না। এখানে এই ফরাসি ভাষার কথা বলা হয়েছে।

১৫। “জর্মন ভাষায় একটি প্রেমের গান আছে Dein Mund sagt ‘Nein’ Aber Deine Augen Sagen ‘Ja'”-এর বাংলা অর্থ কী?

সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে ফরাসি দোকানে প্রবেশ করবার পর ফরাসি ভাষায় কথোপকথন করতে গিয়ে বিব্রত বোধ করেন। কারণ ফরাসি ভাষায় তিনি সাবলীল নন। এই প্রসঙ্গে তিনি ফরাসিদের চিরশত্রু জার্মান-এর একটি গানের কথা বলেছেন, যার বাংলা অর্থ হল তোমার মুখ না না বললেও, তোমার চোখ দুটো বলছে হ্যাঁ হ্যাঁ। অর্থাৎ মনের গোপন কথা চোখ দেখলে বোঝা যায়।

১৬। ‘পরশুরামের কেদার চাটুজ্যেকে আমি মুরুব্বি মানি।’-‘পরশুরামের কেদার চাটুজ্যে কে? ‘আমি’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

বিখ্যাত হাস্যরসিক সাহিত্যিক রাজশেখর বসুর ছদ্মনাম হল পরশুরাম। পরশুরাম ছদ্মনামে লেখা একাধিক হাস্যরসাত্মক রচনা একজন বিখ্যাত চরিত্র হল কেদার চাটুজ্যে। লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী নিজেও একজন হাস্যরসিক ছিলেন। লঘু চপলতায় তিনি এই গল্পে জানিয়েছেন যে তিনি পরশুরামের বিখ্যাত চরিত্র কেদার চাটুজ্যেকে গুরু বলে মেনেছেন। এখানে ‘আমি’ বলতে লেখক স্বয়ং।

১৭। ফ্রাঁসোয়া পঁসে কে ছিলেন?

‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখক ফরাসি কথা বলার প্রসঙ্গক্রমে ফ্রাঁসোয়া পঁসে-র নাম উল্লেখ করেছেন। ফ্রাঁসোয়া পঁসে হলেন ফরাসি রাষ্ট্রদূত’ দক্ষ কূটনীতিক। তিনি জার্মানিতে হিটলারের শাসনকালে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন। হিটলারের সমস্ত কাজকর্ম তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ফরাসির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১৮। “আমার অবস্থা ডডনং হয়ে দাঁড়ায়।”-‘আমার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ডডনং বলতে কী বোঝ?

‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে ‘আমার’ বলতে স্বয়ং লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীকে বোঝানো হয়েছে। ডডনং শব্দের অর্থ মূর্খ, অমনোযোগী। লোকশ্রুতি রয়েছে যে, গণিতের বাংলা ‘৬৬’ লেখার সঙ্গে বাংলা ভাষায় ‘ডডনং’ শব্দটির আকৃতিগত সাদৃশ্যের জন্য ভুলবশত নির্বুদ্ধিতার কারণে লোকমুখে সৃষ্টি হওয়া শব্দ বিশেষ। লেখক এখানে ফরাসি ভাষা সম্বন্ধে নিজের দক্ষতার অভাবকে বোঝানোর জন্য আলোচ্য উক্তিটি ব্যবহার করেছেন।

১৯। ‘এই হল ফরাসি জাতটার গুণ’-ফরাসি জাতির কোন্ গুণের কথা বলা হয়েছে?

লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখক যে ফরাসি বইয়ের দোকানে গিয়েছিলেন, যেখানে থাকা ফরাসি দোকানদারের প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। লেখকের মতে ফরাসি জাতিটি খুব উদার, তাই অনেক কিছু খারাপের মধ্যে সামান্য ভালো কিছু দেখতে পেলেই তারা প্রশংসা করতে দ্বিধা করে না। তাই লেখকের ভুলে ভরা অথচ ফরাসি ভাষায় কথা বলার প্রচেষ্টাকে প্রশংসা করেছিল ফরাসি দোকানদার।

২০। ‘বই আসা মাত্র আমায় খবর দেবেন সে ভরসাও দিলেন’-কে, কাকে কী বিষয়ে ভরসা দিয়েছিলেন?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায়. কলকাতার বুকে গড়ে ওঠে ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ অর্থাৎ ফরাসি বইয়ের দোকানের দোকানদার আলোচ্য বক্তব্যটি বলেছিল লেখক, সৈয়দ মুজতবা আলীকে।

২১। ‘… সুখ-দুঃখের দু-চারটা কথাও বলে ফেললেন’-কে, কাকে কথা বলেছিলেন?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য যে ফরাসি বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেছিলেন, সেই দোকানের দোকানদারের কথা বলা হয়েছে। লেখক অল্পবিস্তর ফরাসি ভাষা জানতেন, তাই শুনে ফরাসি দোকানদার খুব আহ্লাদিত ও আনন্দিত হয়েছিলেন। বহুদিন বাদে দেশের বাইরে বিদেশে নিজের মাতৃভাষায় কথা বলতে পেয়ে তিনি খুব আপ্লুত হয়েছিলেন। লেখককে তিনি নিজের মনের দু-চারটে কথা বলেছিলেন।

২২। ‘পৃথিবীর কি অদ্ভুত রীতি’-মন্তব্যটি কার? কোন্ প্রসঙ্গে লেখক এই উক্তিটি প্রয়োগ করেছিলেন?

বিখ্যাত হিন্দু সন্তকবি, ধর্মসংস্কারক, দার্শনিক তুলসীদাস-এর উক্তি হল- আলোচ্য ‘পৃথিবীর কি অদ্ভুত রীতি’ অংশটি। সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে কলকাতায় ফরাসি দোকান এবং ফরাসি বই বিক্রি প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

২৩। ‘আমার মনে বড়ো আনন্দ হল’-বক্তার আনন্দ হবার কারণ কী?

লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে ফরাসি দোকানে একজন বাঙালি ছেলেকে কমার্শিয়াল আর্টের বইয়ের খোঁজ করতে আমাকে দেখে খুব আনন্দিত হয়েছিলেন।

২৪। ‘ততক্ষণে আমি একটা খাসা বই পেয়ে গিয়েছি’-কে, কোন্ বই পেয়ে যাবার কথা বলেছেন?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’-য় লেখক ফরাসি দোকানের মধ্যে হিটলারের ন্যুরনবর্গের মোকদ্দমার তথ্য নিয়ে হিটলারের চরিত্র সংক্রান্ত একটি বই পেয়েছিলেন। এখানে সেই বইয়ের কথা বলা হয়েছে।

২৫। ভোরের কাক লেখককে কি কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল?

ভোরের কাক লেখককে মনে করিয়ে দিয়েছিল যে সময় শেষ হয়েছে। লেখার মতো এখন আর সময় নেই, অন্য আর-এক দিন লিখতে হবে।


১। ‘আজব শহর কলকেতা’ রচনায় লেখকের পথ হারানোর বেদনা হয়েছিল কেন?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক কলকাতার রাজপথে ঘুরতে ঘুরতে কলকাতার আজবতা নিয়ে প্রবন্ধ লিখবেন ভাবছিলেন। কিন্তু হঠাৎই খুব জোরে বৃষ্টি নামে। লেখকের কাছে তখন ছাতা, বর্ষাতি ছিল না। ছিল না ট্রামে, বাসে, ট্যাক্সিতে যাওয়ার মতো আর্থিক সংগতি। এই অবস্থায় তিনি তাঁর অবস্থা সুন্দর রসিকতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। বৃষ্টির মধ্যে ছাতা, বর্ষাতি ছাড়া কীভাবে বাড়ি পৌঁছাবেন তাঁর এই চিন্তাকে তিনি পথ হারানোর বেদনার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

২। ‘খেয়েছে! নিশ্চয়ই কোনো ফরাসি পথ হারিয়ে কলকাতায় এসে পড়েছে’-লেখকের এ কথা বলার কারণ কী?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে কলকাতার রাজপথে চলার সময় হঠাৎ তিনি ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ অর্থাৎ ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পান। কলকাতা শহরে যেখানে মানুষের বইয়ের প্রতি স্বাভাবিক অনিহা আছে, সেখানে ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে লেখক অবাক হয়ে আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন। লেখকের মনে হয়েছিল কোনো ফরাসি ব্যক্তি হয়তো রাস্তা ভুলে ভুলবশত কলকাতা শহরে বইয়ের দোকান দিয়েছে। তার অনেক পয়সা আছে এবং সেই পয়সা হারাবার কোনো বেদনা তার নেই বলে লেখক মনে করেন।

৩। ‘ফ্রেঞ্জ বুক শপ’-কে কেন লেখক ‘হাতির দাঁতের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন?

সরস রসিকতার মানুষ সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে সেই রসিকতাকে অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। তিনি কলকাতার রাস্তায় একটি ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পেয়েছিলেন। যেখানে স্বাভাবিকভাবে কোনো বইয়ের চাহিদা নেই সেখানে ফরাসি বইয়ের দোকান লেখককে অবাক করেছিল। তিনি স্বাভাবিক কৌতূহলবশত ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’কে হাতির দাঁতের সঙ্গে তুলনা করেছেন। হাতির দৃশ্যমান দাঁত

হাতির খাবার পাচন ক্রিয়ায় সাহায্য করে না। যদিও তা খুবই মূল্যবান। তেমনি কলকাতার বুকে ফরাসি বইয়ের দোকান খুব দুর্লভ। দোকানের সঙ্গে সঙ্গে ফরাসি বইয়ের চাহিদাও দুর্লভ। এই অবস্থায় লেখকের মনে হয়েছিল ফরাসি বইয়ের দোকান আসলে হাতির দাঁতের মতো বাইরে এক, ভেতরে অন্য কোনো নিম্ন মানের বইয়ের সম্ভার আছে।

৪। ফ্রেঞ্চ বুক শপের বর্ণনা দাও।

‘সৈয়দ মুজতবা আলী’ তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে কলকাতার রাজপথে ভ্রমণকালে এক ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’ অর্থাৎ ফরাসি বইয়ের দোকান দেখতে পান। কলকাতার বুকে ফরাসি বইয়ের দোকান লেখককে বেশ খানিকটা অবাক করেছিল। তিনি মনে করেন হাতির দাঁতের মতই ফরাসি ভাষার এই বইয়ের দোকান। অর্থাৎ বাইরে ফরাসি বইয়ের কথা থাকলেও ভেতরে নিম্ন রুচিকর বইয়ের সম্ভার আছে। তিনি ভিতরে প্রবেশ করে বুঝতে পারেন তাঁর ধারণা ভুল। ফরাসি দোকানদার নিজেও বাঙালি হয়ে বাঙালির মতো করে ফরাসি বইগুলোকে সাজিয়েছেন। টাইপরাইটারের হরফে সিজিলটা করা ছিল। এ ছাড়া কিছু হলদে আর সাদা মলাটের ফরাসি বই অগোছালো ভাবে এদিক-ওদিক ছড়ানো। একটি ফুটফুটে মেমসাহেব ফরাসি দোকানে দেখাশোনার জন্য ছিল। সব কিছু মিলিয়ে কলকাতার বুকে ফরাসি আবহে ফরাসি বইয়ের দোকান লেখককে মুগ্ধ করেছিল।

৫। ফরাসি দোকানদার কলকাতায় এসে বাঙালি হয়ে গেছে’- কোন্ বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে লেখক এই কথা বলেছেন?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক কলকাতার রাজপথে যে ফরাসি বইয়ের দোকান দেখেছিলেন, সেই বইয়ের দোকানের দোকানদার প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন। লেখক বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচবার জন্য এই ফরাসি বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন। সেখানে ফরাসি বইয়ের সম্ভার লেখককে অবাক

করেছিল। তিনি দেখেছিলেন ফরাসি দোকানদার বাঙালি দোকানদারের মতো দোকানের বই সাজানোর পদ্ধতিকে আয়ত্ত করেছেন। বাঙালি দোকানদারের মতো টাইপরাইটার হরফে তিনি বইগুলোকে সাজিয়ে রেখেছিলেন। এই দেখে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন লেখক।

৬। ‘পরশুরামের কেদার চাটুজ্যেকে আমি মুরুব্বি মানি’-বক্তার এই রূপ বলার কারণ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখো।

বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, হাস্যরসাত্মক লেখক রাজশেখর বসু পরশুরাম ছদ্মনামে সাহিত্যরচনা করেছেন। তাঁর সৃষ্টি চরিত্র কেদার চাটুজ্যে যিনি হাস্যরসাত্মক ছোটোগল্পের প্রধান নায়ক চরিত্র। লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে এই কেদার চাটুজ্যেকে নিজের মুরুব্বি মানেন। তাই ফরাসি দোকানে থাকা ফুটফুটে মেমসাহেবকে দেখে তিনিও সহজেই তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সরস হাস্যকৌতুকময় পরিবেশ সৃষ্টি করে লেখক সত্যি কেদার চাটুজ্যের যথার্থ উত্তরাধিকারী হয়ে উঠেছেন।

৭। ‘পৃথিবীর কি অদ্ভুত রীতি’-প্রসঙ্গ উল্লেখক্রমে ব্যাখ্যা লেখো।

আলোচ্য উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ থেকে নেওয়া হলেও আলোচ্য উক্তিটি প্রকৃতপক্ষে মহান হিন্দু সন্তকবি, দার্শনিক ও ধর্মসংস্কারক তুলসীদাসের লেখা। লেখক সুদুর ভারতবর্ষের কলকাতা শহরে ফরাসি বইয়ের দোকান এবং সেখানে ফরাসি বই বিক্রি প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন।

পৃথিবীর নিয়ম বড়ো অদ্ভুত-ভালো জিনিস, উপকারী জিনিস বিক্রেতাকে সব সময় তাঁর নিজের বিক্রির দ্রব্যকে ক্রেতার দ্বারে নিয়ে যেতে হয়। আর যেসব দ্রব্য খারাপ বা অপকারী তা কিনতে মানুষ দোকানদারের কাছে ছুটে আসে। উদাহরণ হিসাবে লেখক দুধ আর মদ এই দুই দ্রব্যের বিক্রির তুলনা করেছেন। দুধ উপকারী তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করতে হয় অন্যদিকে মদ শহরের অপকারী অথচ মদের ক্রেতা নিজেই দোকানে এসে উপস্থিত হয়। এই গল্পে ফরাসি বই বিক্রেতা ফরাসি দেশের উৎকৃষ্ট বই সুদূর ফরাসি থেকে এনে কলকাতা শহরে বিক্রি করছে। অর্থাৎ ভালো বইকে তিনি ক্রেতার হাতের কাছে নিয়ে এসেছেন।

৮। ফরাসি বইয়ের দোকানদার লেখক-এর সঙ্গে ফরাসিতে কথা বলার ফলে নিজের সম্বন্ধে কী কী তথ্য দিয়েছিল?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে লেখক ফরাসি দোকানে দোকানদারের সঙ্গে অস্পষ্ট ফরাসি ভাষায় কথা বললে দোকানদার খুব আপ্লুত ও আনন্দিত হয়েছিল। সুদূর কলকাতায় তিনি একজন ফরাসি জানা লোক পাবেন এবং তার সঙ্গে মাতৃভাষায় কথা বলতে পেরে দোকানদার খুব খুশি হয়েছিলেন। নিজের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তিনি লেখককে জানান যে মাত্র তিন মাস হয়েছে তিনি কলকাতায় এসেছেন, তাই ইংরেজি তিনি সাবলীল ভাবে বলতে পারেন না। এই ফরাসি বইয়ের দোকানটা তার নিজের নয়, এক বান্ধবীর। সেই বান্ধবী দোকানে উপস্থিত না-থাকায় তিনি দোকান দেখাশোনা করছেন মাত্র। ভারতবর্ষে তথা কলকাতায় ফরাসি সাহিত্য ও ভাষা প্রচার করবার উদ্দেশ্যে তাদের এই ফরাসি বইয়ের দোকান খোলা হয়েছে।

৯। ‘ফ্রেঞ্চ বুক শপ’-এ দোকানদারকে ফরাসিতে কথা বলতে দেখে লেখকের কী অবস্থা হয়েছিল?

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য এক ফরাসি বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন।

দোকানদারের সঙ্গে কথোপকথনকালে লেখক বিব্রত হন কারণ বুঝতে পারেন দোকানদার ইংরেজী ভালো বোঝেন না এবং ভালো বলতেও পারেন না। তাই একমাত্র ফরাসি ভাষাতেই কথাবার্তা সম্ভব। লেখক বহুদিন আগে ফরাসি সামান্য শিখেছিলেন; ফরাসি ভাষা তিনি পড়তে জানেন, অথচ বলতে জানেন না। কিন্তু তিনি তাঁর সীমিত জ্ঞান দিয়েই আধো-আধো ফরাসি ভাষায় দোকানদারের সঙ্গে ভাব বিনিময় করেছিলেন। অন্যদিকে ফরাসি দোকানদার বিদেশে ফরাসি জানা একজন লোক পেয়ে পরম আনন্দে লেখকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। লেখকের সামান্য ফরাসি জানার দুর্বলতাকে তিনি প্রশংসার দ্বারা জয় করে নিয়েছিলেন।

১০। ‘কী আনন্দ, কী আনন্দ, মেমসাহেবও বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের মত।’-প্রসঙ্গ উল্লেখক্রমে ব্যাখ্যা লেখো।

সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে অনাবিল হাস্যকৌতুক পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজেকে বরজলাল আর ফরাসি দোকানের সাহেবি মেমসাহেবকে বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বরজলাল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কথা ও কাহিনী’ কাব্যের ‘গানভঙ্গ’ কবিতার এক গায়ক। তাঁর সুমধুর গান শুনে রাজা প্রতাপ রায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। এখানে বিদেশে থাকা ফরাসি মেমসাহেব আশা করেননি যে লেখক ফরাসি ভাষায় কথা বলতে পারবে। কিন্তু লেখক যখন অস্পষ্ট ফরাসি বলতে শুরু করেন তখন আনন্দে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে ফরাসি মেমসাহেব। তাই লেখক বরজলাল-এর মতো ফরাসি ভাষার সংগীত শুনে মুগ্ধ হয়েছিল ফরাসি সাহেবি মেম।

১১। ‘হাজারো দোষের মধ্যে একটা কিছু ভালো দেখতে পেলেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে।’-প্রসঙ্গ উল্লেখক্রমে ব্যাখ্যা করো।

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। কলকাতার রাজপথে যেতে যেতে ফরাসি বই-দোকান লেখককে বিস্মিত করেছিল। হঠাৎ আসা বৃষ্টির হাত থেকে আশ্রয়ের তাগিদে লেখক এই বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন। ফরাসি বইয়ের দোকানদার এই ফরাসি মেমসাহেব অত্যন্ত আগ্রহবশত ফরাসি ভাষায় লেখকের সঙ্গে কথা বললে লেখক স্বভাবতই বিব্রত হন। কারণ ফরাসি ভাষার প্রতি দক্ষতা তাঁর খুব-একটা ছিল না। তিনি ফরাসি পড়তে পারলেও বলতে খুব-একটা ভালো পারতেন না। তাই ফরাসি মেমের সঙ্গে সাবলীলভাবে কথোপকথনের লেখকের অসুবিধার কারণ হচ্ছিল। মনের অনেক দ্বিধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত লেখক অল্পবিস্তর ফরাসি কথা বলাতেই ফরাসি মেমসাহেব আপ্লুত হয়ে লেখকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

লেখকের মতে ফরাসিদের অনেক ভালো গুণের মধ্যে একটা হল অন্যকে প্রশংসা করতে পারা। অন্যদের হাজারো খারাপ থাকা সত্ত্বেও যদি কোনো একটা ভালো দিক থাকে তাহলে তারা প্রশংসা করতে দ্বিধা করে না। তাই সুদূর কলকাতায় একজন বাঙালির কাছে অপটু ফরাসি ভাষা শুনে ফরাসি বইয়ের দোকানের মেম, লেখকের ফরাসি বলাকে প্রশংসা করেছিলেন এবং তাকে ফরাসি বলার অনুপ্রেরণা দান করেছিলেন।

১২। ‘পৃথিবীর কি অদ্ভুত রীতি’-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিষয়টি বুঝিয়ে দাও।

আলোচ্য উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ থেকে নেওয়া হলেও আলোচ্য উক্তিটির রচয়িতা হলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক তুলসীদাস। ফরাসি বই-দোকান কলকাতা শহরের বুকে দেখতে পেয়ে এবং সেখানে ফরাসি বই বিক্রি করবার কথা প্রসঙ্গে তুলসী দাসের আলোচ্য উদ্ধৃিতিটি দেওয়া হয়েছে। মদের দোকানের দোকানদার মদ বিক্রি করবার জন্য কারও দ্বারে দ্বারে ঘোরে না কিন্তু দুধ বিক্রেতা দুধ বিক্রির জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরে। অর্থাৎ পৃথিবীতে খারাপ বস্তু বিক্রির জন্য কোথাও যেতে হয় না কিন্তু ভালো জিনিস বিক্রির জন্য মানুষের কাছে পৌঁছাতে হয়। এইসূত্রে লেখক জানিয়েছেন যে সুদূর ফ্রান্স থেকে ফরাসি বই বিক্রির সূত্রে কলকাতার মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তিলোত্তমার বুকে আসতে হয়েছে।

১৩। লেখকের কাছে ফরাসি মেমের সুখ-দুঃখের কথোপকথনের কাহিনি লেখো।

সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ গল্পে তিলোত্তমার বুকে ফরাসি বইয়ের দোকান লেখক দেখতে পান। আগ্রহবশতঃ তিনি বইয়ের দোকানে প্রবেশ করেন। সেখানে একজন ফরাসি মেম লেখককে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। অল্পস্বল্প জানা ফরাসি ভাষায় লেখক মেমের সাথে কথাবার্তা করতে থাকেন। সুদূর কলকাতা শহরে একজন ফরাসি জানা ব্যক্তিকে পেয়ে এবং মাতৃভাষা ফরাসিতে কথা বলতে পারার সুবাদে ফরাসি মেমটি আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে। তিনি লেখকের খোঁজ করা বইয়ের খবর দেবেন-এই আশ্বাস দিয়ে ব্যক্তিগত অনেক কথা আলোচনা করেন।

এই প্রসঙ্গে জানা যায় ফরাসি ছোটো সুন্দরী মেমটি খুব অল্পদিন হল ভারতে এসেছেন। ফরাসি বইয়ের দোকানটা তার নয়, তার এক বন্ধুর। বন্ধুর অনুপস্থিতিতে বন্ধুকে সাহায্য করবার জন্য এবং ফরাসি বইয়ের বিক্রির জন্য তার এখানে আসা। মেমটি ভালো ইংরেজি ভাষা বলতে পারে না। এবং ইংরেজি বুঝতেও পারে না। লেখকের ফরাসি ভাষায় কথা বলার প্রচেষ্টাকে মেমটি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতেও ভোলেননি।

১৪। ‘আমার মনে বড়ো আনন্দ হল’-প্রসঙ্গ উল্লেখক্রমে ব্যাখ্যা লেখো।

আলোচ্য উক্তিটি সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা ‘আজব শহর কলকেতা’ থেকে নেওয়া হয়েছে। লেখক সরস কৌতুকতায় বলেছিলেন যে কলকাতার মানুষ বই পড়তে আগ্রহী নয়। এই ধারণার বশবর্তী হয়ে তিনি প্রবন্ধ আলোচনা এগোলেও শেষে দেখা যায় ফরাসি বইয়ের দোকানে একজন তরুণ যুবককে। তরুণ যুবক ফরাসি ভাষায় কমার্শিয়াল আর্টের বই খুঁজেছিল। কলকাতার ছেলেমেয়ে যে শুধু বাংলা, ইংরেজী নয়; ফরাসি ভাষাতেও পড়াশোনা করছে, এই কথা জানা বা বোঝার পর তিনি খুব আনন্দিত হয়েছিলেন। বাঙালি যে তার দৈন্যদশা থেকে মুক্ত হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে এই কথা বোঝার পর লেখক আনন্দিত হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন – আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment