শিক্ষাক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতির প্রয়োগ লেখো
শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতির গুরুত্ব রয়েছে-
(1) শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য পরীক্ষণ পদ্ধতি কাজে লাগানো যায়। বিশেষ করে মনোবিজ্ঞানসম্মত বিষয়সমূহ যেমন-বুদ্ধি, আগ্রহ, মনোভাব ইত্যাদির ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
(2) শিশুর অশান্ত আচরণ দূর করার জন্য প্রশ্নমালা, ইন্টারভিউ ইত্যাদি কৌশল ব্যবহার করা যায়।
(3) শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের সঙ্গে মানসিক ব্যাধির চিকিৎসার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থী থাকতে পারে। মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষণের মাধ্যমে তাদের মানসিক ব্যাধি অনেকটা দূর করা যায়।
(4) বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী যেমন-অন্ধ, শ্রবণ প্রতিবন্ধী, মানসিক প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে থাকতে পারে। এদের শিক্ষার জন্য পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক তাদের পাঠদানে উপযোগী করে তুলতে পারেন।
(5) প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষেত্রে কীভাবে পাঠদান করলে তারা উপকৃত হবে-শিক্ষক সে ব্যাপারে পরীক্ষা করে দেখবেন।
(6) বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলাগত সমস্যা থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে তাদেরকে সুশৃঙ্খল করে তোলার জন্য কী করা দরকার-সে ব্যাপারে শিক্ষক পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন পদ্ধতিকে কাজে লাগাবেন।
(7) শিক্ষাগত নির্দেশনা ও বৃত্তিগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আচরণ, সামর্থ্য, চাহিদা ইত্যাদি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করে তাদের শিক্ষাগত নির্দেশনা ও বৃত্তিগত নির্দেশনা দিতে পারেন।
(8) শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে শিক্ষাদান করতে হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েরই মানসিক স্বাস্থ্য যথাযথ হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শিক্ষক বিভিন্ন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে পাঠদান করবেন।
সুতরাং শুধুমাত্র পাঠদানের ক্ষেত্রেই নয় শিক্ষার্থীর উপর বিভিন্ন ধরনের কৌশলকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষক পরীক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণ, মনোযোগ, আগ্রহ, মনোভাব ইত্যাদি সংক্রান্ত তথ্যসংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে পারেন।
শিক্ষাকালীন কোনো ঘটনা বা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা ও তার সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনা বা প্রক্রিয়ার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি হল সর্বাপেক্ষা কার্যকর পদ্ধতি। পরীক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের সঠিক কারণগুলি নির্ণয় করা সম্ভব। যার ফলে শিক্ষামূলক আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং এর পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। সুতরাং, শিক্ষাক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি অতি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন –
১। অনুসন্ধান পদ্ধতি কী? মনোবৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির লক্ষ্যগুলি কী কী?
২। অনুসন্ধানের পর্যায়গুলি আলোচনা করো।
৪। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
৫। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির প্রকারভেদ সংক্ষেপে আলোচনা করো।
৬। অংশগ্রহণকারী পর্যবেক্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।
৭। অংশগ্রহণকারী নয় পর্যবেক্ষণের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।
৮। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকে উন্নত করার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন?
৯। একটি আদর্শ পর্যবেক্ষণের বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি সম্পর্কে লেখো।
১০। পর্যবেক্ষণের তথ্য সংগ্রহকারী উপকরণগুলি (Tools of Observation) উল্লেখ করো।
১১। পর্যবেক্ষণমূলক অনুসন্ধানের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করো।
১২। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি বর্ণনা করো।
১৩। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি কাকে বলে? পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহার লেখো।
১৪। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের কৌশলগুলি সংক্ষেপে ‘আলোচনা করো।
১৫। নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতি কী? নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতিতে তথ্যসংগ্রহের কৌশলগুলি আলোচনা করো।
১৬। সাক্ষাৎকার পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো।
১৭। নিজস্ব মতামত প্রকাশের পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করো।
১৮। পরীক্ষামূলক পদ্ধতি কাকে বলে? এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য লেখো।
১৯। পরীক্ষণের স্তরগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
২০। শিক্ষাক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতির একটি নমুনা দাও।
২১। পরীক্ষামূলক পদ্ধতির সুবিধাগুলি লেখো।